প্রতি বছরের মত এবছরও কোলকাতাতে শীতের মরসুম শুরু হতে না হতেই কাশ্মীরি শালওয়ালাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। তাই ওদের ভিড় শুরু হতেই নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝে পুলওয়ামা হামলার পরেই শহর ছেড়ে গিয়েছিলেন ব্যবসা করতে আসা কাশ্মীরি শালওয়ালারা। গত দশ মাসে ঝিলম দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। কাশ্মীর থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ৩৭০ ধারা। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে কাশ্মীর। এত কিছুর পরেও কিন্তু রুজির টানে ফের শাল, কার্পেট, সালোওয়ার, জ্যাকেট, স্কার্ফের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছেন তাঁরা। লালবাজার সূত্রের খবর, কাশ্মীরি শালওয়ালারা মূলত বেহালা, বেলেঘাটা, কাঁকুড়গাছি, ফুলবাগান-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। আবার তালতলা-রিপন স্ট্রিটের মতো এলাকাতেও থাকতে দেখা যায় ওই ভিন্ রাজ্যের অতিথিদের। যদিও কোথাও তাঁরা একা থাকেন না, এক সঙ্গে দল বেঁধে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন ওঁরা।
লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের এলাকার কোথায় কোথায় ওই কাশ্মীরি শালওয়ালারা থাকছেন, তার একটি তালিকা তৈরি করে নজরদারি চালাতে। একই সঙ্গে কলকাতা পুলিশ এলাকায় বসবাসকারী কাশ্মীরি নাগরিকদের নামের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকের ফোন নম্বর স্থানীয় থানার আধিকারিকদের রাখতে বলা হয়েছে। যাতে প্রয়োজনে তাঁদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করতে পারেন থানার পুলিশ আধিকারিকেরা। এ ছাড়াও বিভিন্ন থানার তরফে প্রতিদিন এই শহরের কাশ্মীরিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে।
পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, পুলওয়ামা হামলার পরপর তিলজলা, বেহালা-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় হামলার শিকার হয়েছিলেন কাশ্মীরি শালওয়ালারা। তার পরেই তাঁদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। লালবাজারের কর্তাদের একটি অংশ জানিয়েছেন, এ বছর যাতে তেমন কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা আর না ঘটে সেই নির্দেশ এখনও বহাল রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও নির্দেশমতো স্থানীয় থানা তাদের ফোন নম্বর এলাকায় বসবাসকারী কাশ্মীরি নাগরিকদের দিয়ে রেখেছে। যাতে কোনও রকম অশান্তি বা নিরাপত্তাহীনতার আঁচ পেলেই সরাসরি তাঁরা সংশ্লিষ্ট এলাকার থানাকে ফোনে দ্রুত সে খবর জানাতে পারেন।