সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আন্দোলন । এই আন্দোলন আরও তীব্র হবে রবিবার জেএনইউতে হামলার পর । এই পরিস্থিতিতে বিজেপি দল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সাধারন মানুষ এবং বিশিষ্টদের বোঝানোর জন্য যাচ্ছে । অমিত শাহ থেকে শুরু করে দলের প্রথম সারির নেতারা সাধারন মানুষের কাছে যাচ্ছেন । শুধু সাধারন মানুষ নয় , সেই সঙ্গে বলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি । আজ মুম্বই-এ বলিউডে কলাকুশলীদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযুষ গোয়েল ।কিন্তু তাতেও তেমন সাড়া পাওয়া গেল না। প্রথম সারির সেলিব্রিটিরা এলেনই না বৈঠকে।
সেন্সর বোর্ডের প্রধান প্রসূন যোশী এবং কয়েকজন প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতাদের সঙ্গে নাম কা ওয়াস্তে বৈঠক সারলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল ও বিজেপি সহ সভাপতি বৈজয়ন্ত জয় পান্ডা। আবার মুম্বইয়ের হোটেল বৈঠক চলাকালীনই বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বেশ কিছু সাধারণ মানুষ। ফলে বলিউডের সমর্থন পাওয়ার বদলে ফিল্মি দুনিয়া যে কার্যত এই ইস্যুতে বিজেপির পাশে নেই, সেটাই আরও প্রকট হয়ে প্রকাশ্যে চলে এল।
রবিবার রাতে ওই বৈঠকে সেন্সর বোর্ডের প্রধান ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন প্রযোজক রীতেশ সিধওয়ানি ও ভূষণ কুমার, পরিচালক অভিষেক কাপুর অভিনেতা রণবীর শোরের মতো বলিউড তারকারা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। হিন্দি ও মারাঠি সিনেমা ও টিভি জগতের লোকজন মিলিয়ে সংখ্যাটা ছিল কুড়ির আশেপাশে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কুনাল কোহলি, অনু মালিক, বিপুল শাহ, কৈলাস খের, অনীল শর্মা, শৈলেশ লোধা, শশী রঞ্জন, সুরেষ ওয়াদকার, রাহুল রাওয়াল, শানের মতো সেলেবরা। এ ছাড়া ছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের রাজ্য গুজরাতি টেলিভিশন প্রযোজক-পরিচালক জমনদাস মাজেঠিয়া, দিলীপ যোশী, শৈলেশ লোঢার মতো ব্যক্তিত্ব।
অথচ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল গীতিকার জাভেদ আখতার, অভিনেতা ফারহান আখতার, পরিচালক কবীর খান, রাজকুমার সন্তোষী, সিদ্ধার্থ রায় কপূর, অভিনেতা দিয়া মির্জা, আয়ুষ্মান খুরানা, রাজকুমার রাও, ভিকি কৌশলের মতো তারকাদের। কিন্তু তাঁদের কেউই ওই বৈঠকে যোগ দেননি। তবে তাঁদের পক্ষ থেকে কেউ মন্তব্যও করতে চাননি কেউ। তবে বৈঠকের পর রণবীর শোরে বলেন, ‘‘খুব ভাল বৈঠক হয়েছে। সিএএ নিয়ে যে সব বিষয় হাওয়ায় ঘুরছে, সেগুলো স্পষ্ট করার জন্য এটা সরকারের ভাল উদ্যোগ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সিএএ নিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে আমরা কোনও সমস্যা নেই। আমি আশা করি আরও মানুষ বিভ্রান্ত হওয়া থেকে মুক্ত হবেন।’’
শুধু তারকাদের অনুপস্থিতিই নয়, এই বৈঠক চলাকালীনই হোটেলের বাইরে প্ল্যাকার্ড-পোস্টার হাতে সিএএ-র প্রতিবাদে শামিল হতে দেখা যায় অনেককে। তাঁদের কারও বক্তব্য, ‘‘ফ্যানদের হতাশ করবেন না। সিএএ-এনআরসি-এনপিআর প্রত্যাহার করুন।’’ তাতে অস্বস্তি আরও বেড়েছে বিজেপি নেতৃত্বের।
তবে আগে থেকেই যাঁরা সিএএ-র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, তাঁদের আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। স্বরা ভাস্কর, অনুভব সিনহা, অনুরাগ কাশ্যপ, পরিণীতি চোপড়ার মত অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ।