শহর জুড়ে পেটিএম জালিয়াতির অন্যতম মূল পাণ্ডা-সহ পাঁচ জনকে পাকড়াও করল কোলকাতা পুলিশ । এটিএমের স্কিমিং প্রতারণার মতোই শহরের বেশ কয়েক ডজন মানুষ এই জালিয়াতদের পাল্লায় পড়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন। তদন্তের শুরুতেই কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া গ্যং-কে সন্দেহ করেন প্রতারণার কারিগর হিসাবে। কিন্তু জামতাড়ায় এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে একাধিক গ্যাং যুক্ত থাকায়, ঠিক কোন দল এই কারবার চালাচ্ছে তা চিহ্নিত করতে পারছিল না পুলিশ।
শেষ পর্যন্ত শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত দেওঘর এবং জামতাড়ার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের রবিবার স্থানীয় আদালতে পেশ করা হবে। সেখান থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসা হবে কলকাতায়।
কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ১৫ জানুয়ারি সমীর কুমার সিনহা নামে এক ব্যক্তি শেক্সপীয়র সরণি থানায় প্রতারণার অভিযোগ জানান। তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তিনি একটি ফোন পান। সেই ফোনে বলা হয় পেটিএমে তাঁর কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে। তাঁকে একটি লিঙ্ক পাঠানো হয় এসএমএস-এ। সেই লিঙ্ক-এ ক্লিক করে কেওয়াইসি আপডেট করা মাত্রই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যায় প্রায় সাত লাখ টাকা।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু ওই ব্যক্তি নন, শহর জুড়ে তিরিশের বেশি এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। প্রতি ক্ষেত্রেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির ফোন পেয়ে মেসেজে পাঠানো লিঙ্ক ক্লিক করে কেওয়াইসি আপডেট করতে গিয়ে টাকা খুইয়েছেন মানুষ। কলকাতা পুলিশের এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘ওই লিঙ্কের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে প্রতারণার চাবিকাঠি।” লিঙ্কে ক্লিক করা মাত্রই গ্রাহকের মোবাইল দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে জালিয়াতরা। সেখান থেকে নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে কয়েক মূহুর্তের মধ্যে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাচার হয়ে যায় অন্য অ্যাকাউন্টে।” প্রাথমিক তদন্তের পর জামতাড়া গ্যাংকেই চিহ্নিত করে পুলিশ। কিন্তু দেড়শোর বেশি ভুয়ো নথিতে তৈরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওই জালিয়াতির টাকা পাচার হওয়ায়, শুরুর দিকে মূল গ্যাংকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।