প্রেমে পড়ে বিয়ে পর্যন্ত এগিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু বাধ সাধল ভারত চীন যুদ্ধ। পরিণতি পেলনা সেই প্রেম। রতন টাটা বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর ঠাকুমার কাছে বেড়ে ওঠা, তারপর আমেরিকা যাত্রা, সেখানেই প্রেম পর্ব। ‘হিউম্যানস অফ বম্বে’ নামে একটি জনপ্রিয় ফেসবুক পেজে নিজের জীবনের এমন অনেক কাহিনি শেয়ার করছেন রতন টাটা।

 

রতন টাটা জানিয়েছেন, ছোটবেলাটা তাঁর ও তাঁর ভাইয়ের ভালই কেটেছে। তাঁর বয়স যখন ১০ বছর, বাবা নাভাল ও মা সুনি টাটার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার পর তাঁদের মা আবার বিয়ে করেন। যা নিয়ে বেশ কিছু ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যের মুখে প়ড়তে হয় ছোটবেলায়। তা সত্ত্বেও ঠাকুমা নাভাজবাই টাটার কাছে তাঁদে বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা বেশ ভালই ছিল।

 

স্কুল পাস করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্কিটেকচার নিয়ে পড়াশোনা করতে যান রতন। কিন্তু পড়াশোনা, বাদ্যযন্ত্র শেখার মতো নানান বিষয়ে তাঁর সঙ্গে তাঁর বাবার মধ্যে বিস্তর মতপার্থক্য ছিল। তাঁর বাবা চাইতেন ছেলে ব্রিটেনে পড়াশোনা করুক, কিন্তু তিনি চাইতেন আমেরিকায় পড়াশোনা করতে। বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলে পিয়ানো শিখুক আর রতন টাটার ভালবাসা ছিল ভায়োলিন। আবার বাবা চাইতেন ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করুন, আর রতন টাটার টান ছিল আর্কিটেকচারের দিকে। শেষ পর্যন্ত তিনি আমেরিকায় পড়াশোনা করেন ঠিকই তবে ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, তাঁর পছন্দের বিষয় আর্কিটেকচার নিয়েই। আর এর জন্য তিনি তাঁর ঠাকুমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। শুধু জীবনের এমন নানান মোড়ে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার মুহূর্তে পাশে পাওয়াই নয়, ঠাকুমার দেওয়া মূল্যবোধ আজও তাঁর মধ্যে বেঁচে রয়েছে, তার উপর ভিত্তি করেই তিনি জীবনে এগিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ৮২ বছরের রতন টাটা।

 

 

নিউ ইয়র্কে অবস্থিত এই কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্কিটেকচারে ডিগ্রি পাওয়ার পর লস অ্যাঞ্জেলসে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন রতন টাটা। সেখানে নিজের পয়সায় গাড়ি কেনেন। নিজের কাজ,  লস অঞ্জেলসের আবহাওয়া-- সবই তাঁর বেশ পছন্দের ছিল। বেশ ভালই কাটছিল তাঁর দিন। দু’ বছর ওই কোম্পানিতে চাকরি করেন। সেই সময়ই প্রেমে পড়েন এক মহিলার। তাঁকে বিয়ে করতেও চেয়েছিলেন।

 

 

ইতিমধ্যেই ঠাকুমার শরীর খারাপ হতে শুরু করে। রতন টাটা ফিরে আসেন দেশে। আশা করেছিলেন, যাঁকে তিনি ভালবাসেন, সারা জীবন যাঁর সঙ্গে কাটাতে চান, সেই মহিলাও তাঁর সঙ্গে ভারতে চলে আসবেন। কিন্তু ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে মহিলার বাবা-মা চাননি তাঁদের মেয়ে ভারতে যাক। শেষ পর্যন্ত সেই প্রেমের সম্পর্ক ভেঙেই যায়। পরিণতি লাভ করেনি।

 

হিউম্যানস অফ বম্বে পেজ-এ তিন কিস্তিতে রতন টাটার এই কাহিনি প্রকাশ হবে। বুধবার প্রথম কিস্তি প্রকাশ পেয়েছে। ইতিমধ্যেই সেই পোস্ট ২২ হাজারের উপর লাইক পেয়েছে। কমেন্ট প়ড়েছে ১২০০-র বেশি। আর প্রায় ২৩০০ শেয়ার হয়েছে রতন টাটার এই কাহিনি।

 

 

Find out more: