গনতান্ত্রিক ব্যবস্থান ন্যুনমাত্র সম্মান প্রদর্শন যে বিজেপি দল করেনি তার নজীর অনেক আছে । কিন্ত সরকার গঠন করার লক্ষ্যে একজন বিধায়ক কিনতে হাজার কোটি দেওয়া হয় তা কী বাস্তব ? উত্তর অবশ্যই বাস্তব যদি সেই দলের নাম হয় ভারতীয় জনতা পার্টি । সম্প্রতি কর্ণাটকে জেডিএস-কংগ্রেস জোট সরকারের বিধায়কদের কেনাবেচা করে বিজেপি দল ক্ষমতায় আসে । কিন্ত কর্ণাটক বিধানসভার তৎকালীন কংগ্রেসী স্পীকার এন রমেশ ১৬ জন বিধায়কের সদস্য পদ খারিজ করে দেন । সেই খারিজ হওয়া বিধায়কদের মধ্যে একজন হলেন নারায়ণ গৌড়া । তিনি বলেছেন , তাঁকে দলে টানতে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা হাজার কোটি টাকা দিয়েছিলেন ।
নিজের সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতা করার সময় নারায়ণ গৌড়া বলেন, ‘‘একদিন ভোর ৫টায় আমাকে ইয়েদুরাপ্পার বাড়ি নিয়ে যান এক ব্যক্তি। তখন পুজো করছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। তার পর আমাকে বসতে বললেন। বললেন, আমি সমর্থন করলে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন উনি। জবাবে কৃষ্ণরাজপেটের উন্নয়নের জন্যও ওঁর কাছ থেকে ৭০০ কোটি টাকা চাইলাম আমি। উনি বললেন আরও ৩০০ কোটি দেবেন।’’
ইয়েদুরাপ্পা তাঁর কথা রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন নারায়ণ গৌড়া। কিন্তু স্পিকার কেআর রমেশ বিদ্রোহী বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়ার পর, আর পাশে দাঁড়াননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কথা মতো পরবর্তী কালে ওই টাকা কিন্তু দিয়েছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। আপনাদের কি মনে হয় না, যে ওঁর মতো মহান মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত আমার? তাই করেছি আমি। কিন্তু তার পরেই জানিয়ে দিলেন সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাওয়া বিধায়কদের নিয়ে ওঁর কিছু যায় আসে না।’’
এইচডি কুমারস্বামী এবং কংগ্রেসের জোট সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার আগে জেডিএস বিধায়ক ছিলেন নারায়ণ গৌড়া। জেডিএস–এর আর এক প্রাক্তন বিধায়ককেও টাকা দিয়ে ইয়েদুরাপ্পা দলে টেনেছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
কর্নাটকে নিজেদের সরকার গড়া থেকে বিরোধীদের বিধায়ক ভাঙানো, সবকিছু অমিত শাহের পরিকল্পনাতেই হয়েছিল বলে সম্প্রতি ইয়েদুরাপ্পার একটি অডিয়ো সামনে আসে, যার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি তিনি নিজেও। তার পরেই এই ঘটনা। তবে এখন পর্যন্ত এ নিয়ে বিজেপি এবং ইয়েদুরাপ্পার তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
নারায়ণ গৌড়ার এমন মন্তব্যের পর বিজেপি দল ও মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা অস্বস্তিতে পড়েছেন । এমনিতেই কংগ্রেস ও জেডিএস অভিযোগ করে আসছিল বিধায়কদের অগাধ অর্থ দিয়ে কেনাবেচা করা হয়েছে । এই প্রেক্ষিতে গৌড়ারা আজকের মন্তব্য বিজেপিকে যথেষ্ট চাপে রেখেছে । মনে রাখতে হবে খারিজ হয়ে যাওয়া ১৬ জন বিধায়কের কেন্দ্রে এখনও উপ-নির্বাচন হয়নি । তবে উপ-নির্বাচন হলে বিজেপির জয় যে কঠিন হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।