অনেক টানা পোড়েনের পর শেষ পর্যন্ত সরকার পেতে চলেছে মহারাষ্ট্রবাসী। অবশেষে একসঙ্গে সরকার গড়তে সম্মত হল শিবসেনা-এনসিপি এবং কংগ্রেস। কোন দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে না পারায় বর্তমানে সে Eরাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রয়েছে। ন্যাশনালিট কংগ্রেস পার্টির প্রধান শরদ পাওয়ার বলেছেন, এবার শিবসেনার সঙ্গে কংগ্রেস -এনসিপি জোট হাতে হাত ধরে সরকার গঠন করবে মহারাষ্ট্রে।
যদিও প্রথমে শিবসেনার সঙ্গে সরকার গড়তে রাজি ছিল না কংগ্রেস। তবে শেষ পর্যন্ত আদর্শগতভাবে শিবসেনার সঙ্গে মতভেদ থাকলেও একজোট হয়ে ওই তিন দল পূর্ণ মেয়াদের সরকার চালাবে বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি। জানা গেছে, শনিবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের জন্য অনুমতি চাইবে ওই তিন দল। 
গত সপ্তাহেই শিবসেনা-এনসপি-কংগ্রেস মিলে সরকার গড়লে সেই সরকার ৬ মাসের বেশি চলবে না বলে পূর্ভাবাস দেন বিজেপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। সেই কথাকে কটাক্ষ করে এনসিপি প্রধান পাওয়ার বলেন, “আমি বেশ কয়েক বছর ধরে দেবেন্দ্রজীকে চিনি। তবে আমি জানতাম না যে তিনি জ্যোতিষেরোও ছাত্র”।
বিরোধী জটের মহারাষ্ট্রের আড়াই বছড় করে মেয়াদে দুই দল থেকে দুজন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছেনা। শনিবার বেলা তিনটার সময় শিবসেনা-এনসিপি এবং কংগ্রেস প্রতিনিধি দল মিলে মহারাষাট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির সঙ্গে সাক্ষাত করে সরকার গঠনের দাবি জানাবে বলে খবর। 
শিবসেনার নেতৃত্বেই সরকার গড়বে এনসিপি-কংগ্রেস । জোট তৈরি যেকোনো দিন সরকার গড়তে পারে শিবসেনা । আজ সকালেই সাংবাদিকদের একথা জোর দিয়ে বললেন এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার ।
সেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের সরকার মাসও টিকবে না বলে এর আগে কটাক্ষ করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। তাঁর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই এ দিন এমন মন্তব্য করেন শরদ। তিনি বলেন, ‘‘বেশ কিছু বছর ধরে দেবেন্দ্র ফডণবীসকে চিনি। কিন্তু উনি যে জ্যোতিষশাস্ত্রের ছাত্র ছিলেন, তা জানা ছিল না আমার। সরকার তো গঠন হবেই এবং তা মেয়াদও সম্পূর্ণ করবে। এই জোট সরকার যাতে পাঁচ বছর পূর্ণ করে, তা নিশ্চিত করেই ছাড়ব আমরা।’’
এনসিপি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়তে চাইলেও, মুখ্যমন্ত্রীর পদ ঘিরে নিজেদের দাবিতেই অনড় শিবসেনা। শুরুতেই তাতে রাজি না থাকলেও, বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনার প্রয়োজন বলে এদিন জানান পওয়ার। তিনি বলেন, ‘‘কেউ মুখ্যমন্ত্রীর পদ দাবি করলে, তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে।’’ তবে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে মিবসেনায় ৫ বছর মুখ্যমন্ত্রী পদে থকাবে । উদ্ধব ঠাকরে না তাঁর ছেলে আদিত্য ঠাকরে, মুখ্যমন্ত্রী পদে কাকে বসানো হবে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত শিবসেনার তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে উদ্ধব পিছিয়ে এলে একনাথ শিন্ডেকে ওই পদে বসানো হতে পারে বলে জল্পনা সেনার অন্দরে। তবে জল্পনা যাই হোক না কেন, মুখ্যমন্ত্রী পদটি যে তাঁদের দখলেই থাকবে, এ দিন তা স্পষ্ট করে দেন শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতও। তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, শুধুমাত্র পাঁচ বছর নয়, আগামী ২৫ বছর রাজ্যে শিবসেনাই নেতৃত্ব দেবে।
তবে জানা গেছে , মুখ্যমন্ত্রী পদটি যেহেতু শিবসেনা পাবে , তাই উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদটি দেওয়া হবে কংগ্রেসকে । স্বরাষ্ট্র দফতর পাবে কংগ্রেস , অর্থ দফতর পাবে এনসিপি  বলে ঠিক হয়েছে । নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার ১৮ দিনেও সরকার গঠন না হওয়ায়, রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির সুপারিশ মেনে গত মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়। তার পর থেকে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে শিবসেনা-এনসিপি ও কংগ্রেস-এর মধ্যে।  আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বৃহস্পতিবারই অভিন্ন নূন্যতম কর্মসূচির প্রাথমিক খসড়া তৈরি হয়।
সেখানে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ও মন্ত্রক বণ্টন ছাড়া বাকি বিষয়গুলি নিয়ে অনেকাংশে দলগুলি একমত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে যে তথ্য সামনে এসেছে, তাতে জানা গিয়েছে, রাজ্যের মন্ত্রিসভায় শিবসেনার ১৬ জন, এনসিপির ১৪ জন এবং কংগ্রেসের ১২ জন প্রতিনিধি থাকবে বলে ঠিক হয়েছে আপাতত। বিধানসভার স্পিকারের পদটি পেতে পারে কংগ্রেস। সে ক্ষেত্রে শিবসেনা থেকে কাউকে ডেপুটি স্পিকার করা হতে পারে। বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি যেতে পারে এনসিপির ঝুলিতে। সেখানে ডেপুটির চেয়ারে বসতে পারেন শিবসেনার কেউ।


Find out more: