মালেগাঁও বিস্ফোরণে অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুরকে প্রতিরক্ষা বিষয়ক পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য পদে নিয়োগ করল কেন্দ্র। স্বাভাবিক ভাবেই বিতর্কিত এই সাংসদের প্রতিরক্ষার মতো স্পর্শকাতর মন্ত্রকের উপদেষ্টা কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধীরাও সরব। কংগ্রেসের তোপ, ‘এটা গোটা সামরিক বাহিনীর অপমান’।
এই পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য নির্বাচন ও নিয়োগ সরাসরি সংসদ করে না। সেই কাজ করে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রক। কমিটির সদস্যরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই মতো মন্ত্রককে পরামর্শ দেয়। পাশাপাশি কোনও সুপারিশও করতে পারে। কিন্তু সেই পরামর্শ বা সুপারিশ কার্যকর করতেই হবে, এমন নিয়ম নেই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সেগুলি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। গত ৩১ অক্টোবর এই কমিটিতেই নতুন সদস্য হিসেবে সাধ্বী প্রজ্ঞার নাম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় কেন্দ্র। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা। তিনি আবার ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর থেকেই গৃহবন্দি। ফলে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেও দেখা যায়নি তাঁকে।
কিন্তু ভোপালের সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞাকে এই কমিটিতে নেওয়ায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, ‘জঙ্গিহানায় অভিযুক্ত ও গডসের ভক্তকে সরকার প্রতিরক্ষার মতো প্যানেলে রেখেছে। এটা দেশের সামরিক বাহিনীর, সম্মানীয় সাংসদদের এবং প্রতিটি ভারতীয়ের অপমান।’
কংগ্রেস নেতা প্রণব ঝা বলেন, ‘‘যাঁর বিরুদ্ধে আদালতে এমন মামলা চলছে, তাঁকে কমিটিতে আনা গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল নয়। সংবিধান সব কিছু বলে দেয় না, কিছু সিদ্ধান্ত মানবিকতার দিক থেকেও নিতে হয়।’’ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
২০০৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মালেগাঁওয়ে বাইকে রাখা বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন শতাধিক। সেই বিস্ফোরণ-কাণ্ডেই অন্যতম অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা। এখনও সেই মামলা চলছে । তিনি মামলা থেকে এখনও রেহাই পাননি । অথচ প্রতিরক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ দফতরের কমিটিতে ঠাঁই পেয়ে গেলেন তিনি । তা নিয়েই বিরোধীরা এখন কেন্দ্র কাঠগড়ায় তুলেছে ।