বাবরি মসজিদ মামলার রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানাল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ । সংগঠনের সভাপতি মওলানা আরশাদ মাদানির দাবি, দেশের মুসলিমদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই এই রায় পুনর্বিবেচনার পক্ষে মত দিয়েছেন। প্রায় একই দাবি করে রিভিউ পিটিশন দিতে চলেছে অল ইন্ডিয়া পার্সোনাল ল বোর্ডও। দু’পক্ষেরই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি।
মামলা দায়ের হওয়ার পর জমিয়তের শীর্ষ নেতা মাদানির দাবি, ‘‘আদালতই আমাদের অধিকার দিয়েছে মামলা করার, তাই মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘অযোধ্যা মামলায় বিতর্কের মূল বিষয়বস্তু ছিল মন্দির ধ্বংস করে মসজিদ তৈরি হয়েছিল কি না। শীর্ষ আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, মন্দির ধ্বংস করেই যে মসজিদ তৈরি হয়েছিল, এমন কোনও প্রমাণ নেই। সুতরাং মুসলিমদের অধিকার প্রমাণিত। অথচ চূড়ান্ত রায় এর বিপরীতধর্মী। আমরা রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছি কারণ, রায় বোধগম্য হয়নি।’’ যদিও পাঁচ একর জমি মুসলিম পক্ষকে দেওয়ার যে রায় আদালত দিয়েছে, জমিয়ত সেটা মেনে নেবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। 
গত ৯ নভেম্বর ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ–এর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়ের প্রধান বক্তব্য ছিল, অযোধ্যার মূল বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমিতে রাম মন্দির তৈরিতে কোনও বাধা নেই। মুসলিমদের মসজিদ তৈরির জন্য ওই বিতর্কিত জমির বাইরে ৫ একর জমি দিতে হবে সরকারকে।
এই রায় নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশের মধ্যে তখন থেকেই অসন্তোষ ছিল। তবে মামলাকারীদের অন্যতম পক্ষ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড জানিয়ে দেয়, রায় পুনর্বিবেচনার আর্জিতে মামলা করবে না তাদের সংগঠন। অন্য কোনও পক্ষও প্রথম দিকে এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি। তবে সময় গড়াতেই মামলার প্রস্তুতি শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত সোমবার মামলা দায়ের করল জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ।
প্রায় একই দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে অল ইন্ডিয়া পার্সোনাল ল বোর্ডও। সেই মামলাও দায়ের হতে পারে এই সপ্তাহেই। রবিবার সংগঠনের নেতারা জমিয়তের সুরেই কথা বলেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘অযোধ্যা রায়ের পর থেকেই বিশ্বাস দুর্বল হচ্ছে। দেশের ৯৯ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষই রিভিউ পিটিশনের পক্ষে।’’
তবে এই সিদ্ধান্তে কেন্দ্র যে অসন্তুষ্ট, তা স্পষ্ট করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি। দুই সংগঠনের অবস্থানকেই সমালোচনা করে তাঁর বক্তব্য, দুই সংগঠনই বিভাজন ও বিবাদের পরিবেশ তৈরি করছে।

Find out more: