নিজের ধর্ম পরিত্যাগ করতে চলেছেন প্রাক্তন আইএএস ও মানবাধিকার কর্মী হর্ষ মান্দার । তিনি আজ মঙ্গলবার বলেছেন , সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হলে তিনি নিজেকে সরকারিভাবে মুসলিম বলে ঘোষণা করবেন। একই সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি)-র জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্রও তখন তিনি দেবেন না। সেই তিনি নিজেকে নাগরিকহীন বলে ঘোষণা করবেন । নিজের নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করবেন আর এই অসহযোগ আন্দোলনে সকলকে যোগ দেওয়ার তিনি আহ্বান জানিয়েছেন ।
এক টুইটে তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত আমি দাবি করব, নথিহীন মুসলমানদের যে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, আমাকেও তাই দেওয়া হোক। আমি নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করব। এই অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিন।”
প্রায় সাত ঘণ্টা উত্তপ্ত বিতর্কের পর মাঝরাতে লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়েছে। বিলের পক্ষে ৩১১টি ও বিপক্ষে ৮০টি ভোট পড়েছে। বুধবার রাজ্যসভায় এ বিল পেশ করা হবে।
এর আগে এক সাক্ষাৎকারে হর্ষ মান্দার বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এবং জাতীয় পর্যায়ের এনআরসি দেশভাগের স্মৃতি ও উদ্বেগ ফিরিয়ে আনবে।মান্দারের অভিযোগ, প্রথমে ক্যাবের মাধ্যমে অন্য সম্প্রদায়গুলিকে রক্ষাকবচ দিয়ে, পরের পর্যায়ে এনআরসি-র মাধ্যমে মুসলিমদের নিশানা করছে বিজেপি।
“এক মুহূর্তের জন্য রাজনীতি ও আইনি প্রসঙ্গগুলো সরিয়ে ভাবুন। ভাবুন লক্ষ লক্ষ দরিদ্রতম মানুষের কথা। কীভাবে রাষ্ট্র এ ধরনের একটা ভয়াবহ জিনিস করতে পারে, যার কোনও শেষ নেই।” ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “বিজেপির গেমপ্ল্যান হল প্রথমে মুসলিম ছাড়া সমস্ত ধর্মসম্প্রদায়ের লোকদের সুরক্ষা দেওয়া, এবং তারপর জাতীয় পর্যায়ে নাগরিকপঞ্জী লাগু করা। কার্যত যা হবে তা হল মুসলিমদের জন্য জাতীয় পর্যায়ের এনআরসি। এর অর্থ ভারতীয় বলে আমাদের যে বিশ্বাস, তার সমস্তকিছুকে ধ্বংস করে দেওয়া।”
গত বুধবারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়। এই বিলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে যে সব হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, জৈন ও পার্সিরা এ দেশে এসেছেন তাঁদের ভারতীয় নাগরকিত্ব দেবার ব্যাপারে অতিরিক্ত সুবিধাদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।