নির্ভয়া কান্ডে দোষী সাব্যস্ত অক্ষয় কুমার সিংহের ফাঁসির সাজা বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট । আজ অক্ষয় কুমার সিংহের আইনজীবীর পক্ষ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়েছিল তার শুনানী হয় । পুনর্বিবেচনা মামলায় কোনও ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বিচারপতিদের বেঞ্চ। তবে আদালতে প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ হয়ে গেলেও, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে তা জানাতে পারবেন অক্ষয় কুমার সিং। রাষ্ট্রপতির কাছে মক্কেলের প্রাণভিক্ষার জন্য আদালতে তিন মাসের সময় চেয়েছিলেন নির্ভয়াকাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত অক্ষয়ের আইনজীবী। যার প্রতিবাদ করেন সলিসিটর জেনারেল। পরে ওই সময়সীমা কমিয়ে প্রাণভিক্ষার জন্য এক সপ্তাহ মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৭ সালে ফাঁসির সাজা হয় নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডে চার অভিযুক্তের। ২০১৮ সালের জুলাইতে সুপ্রিম কোর্ট তাদের ২০১৭ সালের রায়ের পূনর্মূল্যায়ণের আবেদন খারিজ করে দেয়। ২০১২ সালের ১৬ জিসেম্বর দিল্লির একটি চলন্ত বাসে নির্মমভাবে ধর্ষণ এবং ভয়াবহ যৌন নির্যাতন করে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয় ২৩ বছরের প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে। ১৩ দিনের লড়াই শেষে ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। এরপর ঘটনায় যুক্ত ছ’জন ধর্ষককে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে অভিযুক্তদের মধ্যে পাঁচ জনের ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। এক দুষ্কৃতী নাবালক হওয়ার কারণে দু’মাস জুভেনাইল হোমে বন্দি থাকার পরে মুক্তি পায়। বাকি পাঁচ জনের মধ্যে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত জেলের ভিতরে আত্মহত্যা করে।
এর আগে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডের অন্যতম দোষী অক্ষয় সিং সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। সর্বোচ্চ আদালতে বিচারপতি আর ভানুমতীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে বুধবার সকালে তার শুনানি চলে। মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নির্ভয়া মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আক্ষয় কুমারের সাজা কমানোর আর্জি মামলা থেকে সরে দাঁড়ান প্রধান বিচারপতি বোবদে।
পরিবারের দারিদ্রতাকে হাতিয়ার করে এদিনের শুনানিতে সওয়াল করেন অক্ষয় সিংয়ের আইনজীবী। সংবাদ মাধ্যম ও রাজনৈতিক চাপে তাঁর মক্কেলকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে বলে আদালতকে বলেন আবেনকারীর আইনজীবী। দিল্লি সরকারের হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সাজা কমানোর আবেদনের প্রবল প্রতিবাদ করেন। কোর্টে তিনি বলেন,’কিছু অপরাধের ক্ষমা হয় না। ঈশ্বরও দোষীদের সৃষ্টিকর্তাভেবে লজ্জা বোধ করেন। তাই ফাঁসির সাজা কমানোর কোনও প্রশ্নই উঠতে পারে না।’ আদালত জানায় এ সংক্রান্ত বিষয়ে আগেই বিতর্ক হয়ে গিয়েছে।