সিএএ ও এনআরসি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মূল টার্গেট যে বাংলা তা আজ রামলীলা ময়দানে মোদীর বক্তব্যে স্পষ্ট । শুধু বাংলা নয় , জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । তাঁর ৯৯ মিনিটের ভাষণের সিংহভাগ ছিল সিএএ ও এনআরসি নিয়ে কথা । আর মোদীর ভাষণের লক্ষ্য ছিল কংগ্রেস ও তৃণমূল নেত্রী । দেশজুড়ে সিএএ ও এনআরসি নিয়ে যে গণআন্দোলন চলছে তারই চাপে মূলত মোদী কংগ্রেস ও মমতাকে আক্রমণ করেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে ।
প্রাণ থাকতে বাংলায় সিএএ এবং এনআরসি হতে দেবেন না বলে ইতিমধ্যেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে গত সপ্তাহে একাধিক বার পথেও নেমেছেন তিনি। কত জন সিএএ–র পক্ষে এবং কত জন বিপক্ষে, তা পরখ করে দেখতে সেখানে রাষ্ট্রপুঞ্জ বা মানবাধিকার কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সংগঠনকে দিয়ে গণভোট করানোর সুপারিশও করেন তিনি। যদিও পরে সেই মন্তব্য থেকে সরে দাঁড়ান মমতা। জানান, ‘‘আমার মন্তব্যের অপব্যাখ্যা হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের তদারিকতে ভোট হোক, শুধু এটুকুই বলেছিলাম আমি।’’
রবিবার রামলীলা ময়দানে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার সভা থেকে মমতার এই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘কলকাতা থেকে সটান রাষ্ট্রপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ কয়েক বছর আগে এই মমতাই সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর কথা বলতেন। বলতেন, ধর্মীয় নিপীড়ণের শিকার হয়ে সেখান থেকে আসা শরণার্থীদের সাহায্য করা হোক। সেইসময় সংসদে স্পিকারের সামনে কাগজও ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। এখন কী আপনার কী হল দিদি? হঠাৎ কেন পাল্টে গেলেন? কেন গুজব ছড়াচ্ছেন? নির্বাচন আসবে যাবে, ক্ষমতা আসবে যাবে, এত ভয় পাচ্ছেন কেন? বাংলার মানুষের উপর বিশ্বাস রাখুন। হঠাৎ তাঁদের উপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেল কেন? কেন বাংলার মানুষকে শত্রু ভাবছেন?’’
২০১৬–র শেষ দিকে ডানকুনি, পালসিট, মুর্শিদাবাদ–সহ রাজ্যের বেশ কিছু টোলপ্লাজায় সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে কেন্দ্র–রাজ্য সঙ্ঘাত চরমে ওঠে। তা নিয়েও এ দিন মমতাকে একহাত নেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগে কলকাতার বাইরে রুটিন কর্মসূচি চালাচ্ছিল সেনা। তা নিয়ে হাঙ্গামা শুরু করে দেন দিদি। বলতে শুরু করেন, বাংলায় সেনা পাঠিয়েছেন মোদী। আর আজ নাগরিকত্ব বিল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আপনার সমস্যা আমি বুঝি দিদি। আপনি কাদের সমর্থন করছেন আর কাদের বিরোধিতা করছেন, গোটা দেশ তা দেখছে।’’