সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে দেশ জুড়ে চলা ক্ষোভ–বিক্ষোভের আঁচ এ বার হানা দিল বিজেপি–র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স বা এনডিএ–এর অন্দরেও। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন এনডিএ শরিক শিরোমণি অকালি দলের (এসএডি) নেতা ও সাংসদ নরেশ গুজরাল। তাঁর দাবি, সিএএ চালু করার মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে শরিকদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করেনি বিজেপি। লোকসভা ও রাজ্যসভায় মসৃণ ভাবে পাশ হয়ে গেলেও, দেশজোড়া বিক্ষোভ–প্রতিবাদের মুখে পড়ে সিএএ নিয়ে বিপাকে পড়েছে মোদী সরকার। ওই আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে বিরোধীরাও। কিন্তু, এ বার মোদী সরকারের চাপ বাড়িয়ে দিল এনডিএ শরিক শিরোমণি অকালি দল। সিএএ নিয়ে এনডিএ শরিকদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অকালি দলের নেতা নরেশ বলেন, ‘‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এনডিএ–তে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। এটা আরও দুর্ভাগ্যজনক যে কারও মতামত পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। এই কারণে এনডিএ শরিকরা খুশি নয়।
জাতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জোরাল বার্তা দিয়েছেন এসএডি নেতা নরেশ গুজরাল। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিভিন্ন সময়ে, বার বার বলেছি যে, আমাদের বাজপেয়ীর দেখানো পথে চলা উচিত। আপনারা মনে করতে পারবেন বাজপেয়ীজি অন্তত ২০টি দলকে নিয়ে জোট সরকার চালিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও প্রত্যেকে খুশি ছিল, কারণ প্রত্যেককে সম্মান দেওয়া হত। তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে সমান ব্যবহার করা হত।’’ বাজপেয়ী জমানাতেও এনডিএ–র শরিক ছিল এসএডি। সে সময়ের কথা তুলে ধরে নরেশ বলেন, ‘‘ওঁর দরজা সব সময় খোলা ছিল। তখন আলোচনা হত।’’
এই সূত্রেই প্রয়াত অরুণ জেটলির কথা টেনে নরেশ বলেন, ‘‘তিনি যত দিন জীবিত ছিলেন আমি বলতাম, আলোচনার রাস্তা খোলা রয়েছে। এক জন অন্তত ছিলেন যাঁর কাছে যাওয়া যেত। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তাঁর মৃত্যুর পর সেই রাস্তাও আরও কাজ করছে না।’’
সিএএ নিয়ে বক্তব্যের সূত্র ধরেই এনডিএ–তে থাকা বা না থাকা নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। নরেশ দাবি করেন, ‘‘সরকার কী অবস্থান নিচ্ছে গোটা বিষয়টি তার উপরেই নির্ভর করবে।’’ এই সূত্রেই এনডিএ–র বাকি শরিকদের কথাও উঠে এসেছে তাঁর সাক্ষাৎকারে, তাঁর দাবি, ‘‘আমি অনেক শরিকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তারা কেউই সত্যি খুশি নয়। এই বিষয়ে তারা খুশি নয় যে সময়ে সময়ে বৈঠক হচ্ছে না। আমার মনে হয়, কিছু সংশোধন প্রয়োজন।’’