ভোডাফোন এবং এয়ারটেল কেন্দ্রের আবেদন করেছিল তাদের বকেয়া যা রয়েছে তা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক । কেন্দ্র সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই জিও কর্ণধার মুকেশ আম্বানি চিঠি দিয়ে সরকার বলেছে ওই দুই টেলিকম সংস্থাকে যেন বকেয়া থেকে অব্যাহতি না দেওয়া হয় । কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে লেখা এক চিঠিতে মুকেশ আম্বানীর সংস্থা বলেছে ,শেয়ার বেচে বকেয়া টাকা মেটানোর ক্ষমতা রয়েছে ওই দুই সংস্থার। তা থেকে কোনও ভাবে রেহাই দেওয়া উচিত নয় তাদের।
প্রতিটি টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার কাছ থেকে শুল্ক আদায় করে কেন্দ্রীয় সরকার। ৫ শতাংশ হারে শুল্ক আদায় করা করা হয় তাদের লভ্যাংশের উপরও। কিন্তু একটানা ১১ ত্রৈমাসিকে বিপুল লোকসান হওয়ায় সেই বাবদ ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার বকেয়া মেটাতে পারেনি ভোডাফোন এবং এয়ারটেল, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। গতমাসে তাদের সেই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালতের রায়ের পর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বকেয়া অর্থ মকুবের আর্জি জানায় ওই দুই সংস্থা। তারা জানায়, অন্যান্য শিল্পের মতো এই মুহূর্তে টেলিকম ক্ষেত্রও ধুঁকছে। একটানা ১১ ত্রৈমাসিকে লাভের মুখ দেখেনি ভোডাফোন আইডিয়া। জুন ত্রৈমাসিকে প্রথমবার বিপুল ক্ষতি হয়েছে ভারতী এয়ারটেলেরও। এমন পরিস্থিতিতে পরিষেবা এবং রাজস্ব শুল্কের উপর কিছুটা ছাড় দেওয়া হোক।
তাদের দাবি মেনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছিল টেলিকম মন্ত্রক। ওই দুই সংস্থাকে কোনওরকম ছাড় দেওয়া যায় কি না, তার জন্য একটি প্যানেলও গঠিত হয়েছিল। তাতেই বাদ সেধেছে মুকেশ অম্বানীর সংস্থা। রিলায়্যান্স জিয়োর নীতি–নির্ধারণ সংক্রান্ত বিভাগের প্রেসিডেন্ট কপূর সিংহ গুলিয়ানি চিঠিতে জানান, ‘সম্পত্তি বা ১৫–২০ শতাংশ শেয়ার বেচেই ৪০ হাজার কোটি টাকা শোধ করতে পারে ভারতী এয়ারটেল লিমিটেড। ইন্ডাস টাওয়ার ব্যবসা থেকেও টাকা জোগাড় করা সহজ। ওই ব্যবসায় ভোডাফোনেরও অংশীদারিত্ব রয়েছে। এ ছাড়াও, টাকা জোগাড়ের অন্য অনেক উপায় রয়েছে ওদের কাছে।’
চিঠিতে যে এয়ারটেলের ইন্ডাস টাওয়ার ব্যবসার কথা উল্লেখ করেছেন গুলিয়ানি, তার আওতায় ভারতে ১ লক্ষ ৬৩ হাজারের বেশি মোবাইল টাওয়ার পরিচালনা করে এয়ারটেল। শীর্ষ আদালতের রায় ঘোষণার তিন মাসের মধ্যে ওই এয়ারটেল এবং ভোডাফোনকে ওই টাকা মিটিয়ে দিতে হবে বলে দাবি করেছে রিলায়্যান্স। এই নিয়ে টেলিকম মন্ত্রককে তিনটি চিঠি দিল তারা। বিষয়টি নিয়ে ওই দুই সংস্থার তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এ বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী একটি সংস্থা কীভাবে সরকারকে চিঠি দেয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । প্রশ্ন উঠেছে তাহলে সরকার কী একটি বিশেষ ব্যবসায়ী সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ? তা না হলে কোন কোম্পানির বিরুদ্ধে সরকার কী ব্যবস্থা নেবে বা কোন কোম্পানিকে কী সুবিধা দেবে তা নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার অধিকার কী কোনো বেসরকারি সংস্থার আছে ?