হোয়াটসঅ্যাপে আড়ি পাতার বিষয়টি নিয়ে দেশের বিরোধী দলগুলি এবার সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ দাবি করে আবেদন করতে চলেছে । তারা সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে বিষয়টি তদন্ত করার দাবি জানাচ্ছে । একই সঙ্গে তারা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপও চাইছে ।
আগামী ১৮ নভেম্বর থেকে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সেখানে এই বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা সরকারের জবাব চাইতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সোমবারই এ নিয়ে এক প্রস্থ আলোচনা হয় বিরোধী শিবিরের নেতাদের মধ্যে। ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। তিনি জানান, এ ব্যাপারে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে ফের আলোচনা হবে। তার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।
কয়েক দিন আগে হোয়াটসঅ্যাপ দাবি করে, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন চারটি মহাদেশের এমন অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নজরদারির শিকার হয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েক জন সাংবাদিক, দলিত আন্দোলনের নেতা, মানবাধিকার কর্মী ও রাজনৈতিক নেতা। অভিযোগের আঙুল ওঠে ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র দিকে। হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, ‘পেগাসাস’ স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর তথ্য হাতানোর চেষ্টা করেছে এনএসও। বিষয়টি সামনে আসতেই ভারত সরকার হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের কাছে এর ব্যাখ্যা চায়। শুধু তাই নয়, ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা করতে কী পদক্ষেপ করেছেন হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়।
সোমবার সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, ভারতের ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা করার সব রকম চেষ্টা করছে তারা। ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ।
বিষয়টি সামনে আসার পর বিরোধী দলগুলো এ ব্যাপারে মোদী সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দু’দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তাঁর ফোনেও আড়ি পাতা হয়েছিল। তার পর একে একে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা এবং এনসিপি নেতা প্রফুল্ল পটেলও একই অভিযোগ তোলেন। সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে ফোনে আড়ি পাতার মামলার এক প্রস্থ শুনানি হয়। এ ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্ট বলে, “এ ভাবে ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে কেন? দেশের মানুষের গোপনতা বলে আর কিছু রইল না? প্রতি দিন কিছু না কিছু ঘটছেই। এ দেশে হচ্ছেটা কী?” অন্য দিকে, এ বিষয়টি নিয়ে ওই দিনই ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন সমাজকর্মী কে এন গোবিন্দচার্য। ফলে বিষয়টি নিয়ে সরকার ও হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের আরও চাপ বাড়ল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।