করোনা ভাইরাস চীনে রীতিমত মহামারির আকার ধারণ করতে চলেছে। উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃতের সংখ্যা। কেন্দ্রের উদ্বেগ বাড়িয়ে ভারতেও প্রবেশ করেছে চীন থেকে আসা ভারতীয়দের মাধ্যমে। তাই এবার ভিসার ব্যাপারে কড়াকড়ি হচ্ছে কেন্দ্র। গত ২ ফেব্রুয়ারি চিনের পর্যটকদের জন্য ই-ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে ভারত। এ বার চিনের নাগরিক ও যে বিদেশি পর্যটকেরা গত দু’সপ্তাহের মধ্যে চিনে গিয়েছেন তাঁদের ভিসা ‘অবৈধ’ বলে ঘোষণা করল বিদেশ মন্ত্রক। পাশাপাশি, যাঁরা ইতিমধ্যেই ভারতে রয়েছেন (রেগুলার বা ই-ভিসা নিয়ে) এবং ১৫ জানুয়ারির পরে চিন থেকে ভারতে এসেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে চিনের ভারতীয় দূতাবাসের তরফে।
সম্প্রতি হংকংয়ে এক করোনাভাইরাস আক্রান্তের মৃত্যুর পরে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি-হংকং সব বিমান বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছে এয়ার ইন্ডিয়া।
তিন জন আক্রান্ত হওয়ার পরে করোনাভাইরাসকে গত কাল ‘রাজ্যের বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা করেছে কেরল। যার আঁচ এসে পড়েছে পর্যটন শিল্পেও। প্রথমে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ, তার পর বন্যা ও এখন করোনা-আতঙ্কে কেরলের পর্যটন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানাচ্ছে হোটেলগুলি।
ইতিমধ্যেই ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের বুকিং বাতিল করে দিয়েছেন বহু পর্যটক। আজ বিধানভায় প্রশ্নোত্তর-পর্বেও এই প্রসঙ্গ তোলেন পর্যটনমন্ত্রী কাডাকামপল্লী সুরেন্দ্রন। তিনি বলেছেন, ‘‘নিপা ভাইরাসের সময়েও নেতিবাচক প্রচারের মাসুল গুনতে হয়েছিল পর্যটন শিল্পকে। এ বারও করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে ঠিক একই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। রাজ্যে তিন জন আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়াতেই ফেব্রুয়ারি-মার্চের সব বুকিং বাতিল হয়ে যাচ্ছে।’’
সংবাদমাধ্যমকে এর জন্য দায়ী করে তিনি বিপর্যয়ের সময়ে তাদের সংযত থাকার আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের সতর্ক থাকতে হবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু অহেতুক মানুষকে ভয় দেখানোর কোনও দরকার নেই।’’ করোনা সংক্রমণ রুখতে কেরলে গঠন করা হয়েছে টাস্ক ফোর্স। এর মোকাবিলায় অর্থ বরাদ্দ করতে পারবে কেরল সরকার।
করোনার আতঙ্কে বন্ধ করে দেওয়া হল ভারত ও মায়ানমার সীমান্তবর্তী অরুণাচলের পাংসু পাস বাজার। অরুণাচলের সঙ্গে চিনের প্রায় ১০৮০ কিলোমিটার বিস্তৃত সীমান্ত রয়েছে। মায়ানমার ও চিনের সীমান্ত ২২০৪ কিলোমিটার। চিন ও অরুণাচলের সীমান্ত অনেক দিন ধরেই বন্ধ। কিন্তু মায়ানমার-অরুণাচল সীমান্তে কেনাবেচা, নিয়ন্ত্রিত যাতায়াত চলে। কিন্তু চাংলাং জেলা প্রশাসন আপাতত ২১ মার্চ পর্যন্ত পাংসু পাস বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।