যদিও রাজ্যে করোনা পজিটিভ মানুষের মধ্যে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে, তবে মুখ্যমন্ত্রীর দাবী অনুসারে তাদের সকলের মৃত্যুর কারন করোনা নয়। বেলঘরিয়ার রথতলা লাগোয়া বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৫৭ বছরের এক প্রৌঢ়। সকালে তিনি মারা যান। বিকেলে মৃত্যু হয় পঞ্চসায়রের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা-আক্রান্ত বৃদ্ধের।
এ দিন বিকেলে করোনা-পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পরে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে (তখনও অবশ্য পঞ্চসায়রের বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর আসেনি)। তা-ও এক জনের নিউমোনিয়া ছিল। আর এক জনের কিডনির সমস্যা ছিল। নিয়মিত ডায়ালিসিস হত। এই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য দফতর নিশ্চিত না-করা পর্যন্ত কোনও মৃত্যুকে নোভেল করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যু বলা উচিত নয় বলে মত তাঁর। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তিন জনের মৃত্যুর নিশ্চয়তা মিলেছে। বাকিগুলির নিশ্চয়তা মেলেনি। কনফার্মেশন না-হলে দয়া করে বলবেন না। কিছু নার্সিংহোমের নাম প্রচারের জন্য এ সব করা ঠিক হবে না। সুপ্রিম কোর্টও দায়বদ্ধতার পরামর্শ দিয়েছে। দেশে ডিজ়াস্টার আইন রয়েছে।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭। তিন জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। রাতে নাইসেডের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী এ দিন রাজ্যে আরও ১৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে পাঁচ জন স্বভূমি সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে, চার জন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে, দু’জন নাগেরবাজারের বেসরকারি হাসপাতালে, এবং সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ও সেনা কমান্ড হাসপাতালে এক জন করে ভর্তি আছেন। মমতা বলেন, ‘‘চারটি পরিবারেই ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাই দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে। এখন আগুন নিয়ে খেলবেন না। আগামী দু’সপ্তাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’
বেলঘরিয়ার মৃত প্রৌঢ় দীর্ঘদিন ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। এরই মধ্যে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে ২৬ মার্চ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রবিবার ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় তাঁকে। সোমবার নমুনা পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার জানা যায়, তিনি করোনা-পজ়িটিভ। এ দিন সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ২৩ তারিখ পঞ্চসায়রের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন এগরা-যোগে ভয়াল ভাইরাসের কবলে পড়া ৬৬ বছরের বৃদ্ধ। এ দিন বিকেল ৩ টে ৪০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্তা সিঞ্চন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বৃদ্ধের মৃত্যুর কারণ, ‘মাল্টি অর্গান ফেলিওর ইন আ কোভিড ১৯ ইনফেকশন’। মৃতের স্ত্রী ও ছেলে, রাজারহাট কোয়রান্টিন কেন্দ্রে ভর্তি থাকায় ছেলের সম্মতি নিয়ে দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।