রবিবার সরকারিভাবে কিছু জানা না গেলেও বেসরকারি সুত্রে জানা গেছে রাজ্যে আরও কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন এবং এদের মধ্যে  মধ্যমগ্রাম পুরসভার এক চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিলএর ও আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

 

তবে পাশাপাশি সুস্থ হয়ে উঠছেন অনেকেই।  শনিবার রাজ্যের দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত, তাঁর সংস্পর্শে আসা পরিচারক, আলিপুরের বাসিন্দা এক মহিলা এবং এগরা-যোগে আক্রান্ত বৃদ্ধার দ্বিতীয় দফার নমুনা নেগেটিভ আসায় তাঁদের ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তেহট্টে একই পরিবারের পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনের দ্বিতীয় দফার নমুনা নেগেটিভ এসেছিল। এ দিন বেলেঘাটা আইডি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তেহট্টের পরিবারের সদস্য ন’মাসের শিশুকন্যার প্রথম দফার নমুনা নেগেটিভ এসেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার শহরতলির যে বাসিন্দা  বিদেশ-যোগে আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাঁরও প্রথম দফার নমুনা নেগেটিভ। স্বাস্থ্য ভবনের খবর, স্বভূমি সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বরাহনগরের বাসিন্দাও নেগেটিভের তালিকায় রয়েছেন। 

 

মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, লকডাউনের পর থেকে এলাকায় গরিব মানুষদের খাবার বিলি করেছেন আক্রান্ত সিআইসি। কোথায়, কী ভাবে তিনি সংক্রমিত হলেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। আক্রান্তের সংস্পর্শে না এলেও সতর্ক নাগরিক হিসেবে তিনি নিজেকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান। বস্তুত, জনপ্রতিনিধির আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনকে উদ্বেগে রেখেছে। জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার আর জি কর হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি হন ওই কাউন্সিলর। শনিবার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাঁকে আইডি-তে নিয়ে যাওয়া হয়। আইডির সুপার তথা উপাধ্যক্ষ আশিস মান্না বলেন, ‘‘চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। এখনই ওঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলা যাবে না।’’ প্রসঙ্গত, আইডি-র শয্যা সংখ্যাও ৫০টি বাড়িয়ে ৮২ করা হয়েছে।

 

শনিবার রাতে স্বভূমি সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতাল থেকে হাওড়ার সালকিয়ার বাসিন্দা, ৫৭ বছরের এক মহিলাকেও স্থানান্তরিত করা হয়েছে আইডি-তে। মহিলা কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি নিউমোনিয়া, থাইরয়েড এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগী। আশিসবাবু বলেন, ‘‘মহিলার অবস্থা উদ্বেগজনক। তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে।’’ এ ছাড়া, পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘তমলুকের করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের পরিবারের আরও চার সদস্য ও হলদিয়ার দুই বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত বলে রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। পাঁশকুড়া করোনা হাসপাতালে এঁদের চিকিৎসা হচ্ছে।’’

 

এ দিকে, সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে যে ব্যক্তি করোনা সন্দেহে চিকিৎসাধীন ছিলেন, এ দিন তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে চিকিৎসার পরে তাঁর প্রথম পরীক্ষার নমুনা নেগেটিভ এসেছিল। বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির ডায়াবিটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর প্রেক্ষিতে চিকিৎসক-সহ একাধিক স্বাস্থ্যকর্মীকে রাজারহাটের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ তথা সুপার তরুণ পাঠক বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যা বলার স্বাস্থ্যভবনে জানিয়েছি।’’ চিকিৎসক সংগঠন— অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘মৃতের সংস্পর্শে আসায় ২৭ চিকিৎসককে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে জেনেছি। ’’

 

Find out more: