সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে - কবির এই লাইনের মর্মার্থ বুঝে শরৎচন্দ্রের লালুর মত কেউ কেউ তো এখনও পরের তরে ছুটে চলেছেন। কোনো ভাবনা চিন্তা না করেই নিস্বার্থেই তাঁরা এগিয়ে চলেছেন। আর তাঁরা পরের তরে এভাবে এগিয়ে চলার জন্যই এখনও সমাজকে পুরোপুরি স্বার্থপর বলা যাচ্ছেনা। 
এসে গেল ফের পুজো। গত কয়েকদিন ধরে একটানা বৃষ্টি, প্রকৃতির মুখভারে সত্যি করেই উৎসবমুখী মানুষের মুখও শুকিয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি কমতেই ঝাঁপিয়ে নেমে পড়েছেন মানুষজন রাস্তায়। দোকানে দোকানে এখন দম ফেলার সময় নেই। কিন্তু যাঁরা এখনও নিজেদের অদৃষ্টের হাতে সঁপে দিয়েছেন। যাঁদের এখনও দোকানে গিয়ে পছন্দ করে জামাকাপড় কেনার ভাগ্য হয়নি - সেই সমস্ত মানুষদের জন্য প্রতিবছরই বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসেন। এবারেও পিছিয়ে নেই অনেকেই। 
বর্ধমানের পাল্লারোডের পল্লীমঙ্গল সমিতি বিনা পয়সার বাজারই খুলে দিয়েছে এই সমস্ত মানুষদের জন্য। সম্প্রতি বাজেপ্রতাপপুরের একটি সংস্থাও ৩০ হাজার পোশাক বিতরণ করার কাজ শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোও এব্যাপারে পিছিয়ে নেই। আর এবার একদল যুবক যুবতী নতুন, পুরোনো জামা, কাপড়ের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছেন সমাজের অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা একদল শিশুর মুখে হাসি ফোটাতে। 
বর্ধমান শহরের উৎসব ময়দান এলাকার প্রায় ৬০০ নানান বয়সের মানুষের হাতে বিনা পয়সায় জামা কাপড় তুলে দিলো সকলের তরে সকলে আমরা নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সংস্থার পক্ষে দীপ সোম জানিয়েছেন, এই উদ্যোগ প্রথম নয়, এর আগে শহরের বাজেপ্রতাপপুর এলাকায় দুস্থ মানুষদের মধ্যে জামা,কাপড় বিতরণ করা হয়েছে। তিনি জানান, উৎসব সবার, তাই সবার সাথে সমাজের পিছিয়ে পড়া এই মানুষগুলোও যাতে সমান আনন্দের ভাগীদার হতে পারে তার জন্যই তাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। এদিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেলো, কচি কাঁচাদের সঙ্গে নানান বয়সের মানুষের ভিড়। পুজোর মধ্যে হাতের কাছে নিজেদের পছন্দ মতো জামা কাপড় পেয়ে মানুষগুলোর চোখে মুখে ফুটে উঠছিল খুশির আমেজ। আর এই সব মুখ গুলোতেই হাসির খোরাক পৌঁছে দিতে পেরে আরও খুশি সংস্থার সাথে যুক্ত সন্দীপ,মিতালি,অয়ান্তিকা, পূজা,অঙ্কনার মতো যুবক যুবতীরা।


Find out more: