কলকাতায় এলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা । বহুবার কলকাতায় এসেছেন । কিন্ত এবার আসাটা অন্য রকম । কোনো সরকারি সফরে নয় , ভারত-বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ দেখার জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির আমন্ত্রণে তিনি এসেছেন । কিন্ত পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্তরিকতায় তিনি মুগ্ধ । তাই সটান ইডেনে বসে মমতাকে তুমি বলে সম্বোধন করলেন । জড়িয়ে ধরলেন মমতাকে । সব কিছুই হয়েছে প্রোটোকল না মেনেই । বাঙালিত্বের মমত্ববোধ থেকে ।
সন্ধ্যায় তাজ হোটেলে একান্তে বৈঠকে বসেন হাসিনা –মমতা । সেখানে নানা বিষয় কথা হয়েছে বলে জানা গেছে । ২০ মিনিটের বৈঠকের চলে ৫০ মিনিট পর্যন্ত । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের এদেশে বিনিয়োগ করতে অনুরোধ করেন । বিশেষ করে সাইকেল ইন্ডাস্ট্রি করতে চাইলে তিনি জমি দিতে রাজি আছেন বলে হাসিনাকে জানান ।
এরপরেই হাসিনা সাংবাদিকদের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। শুক্রবার আলিপুরের একটি পাঁচতারা হোটেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে হাসিনা সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আশা করি, সেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চিরদিন বজায় থাকবে।’’ অন্য দিকে মমতা বলেন, ‘‘দুই বাংলা ও দুই দেশের নানা বিষয়ে কথা হয়েছে। আমাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ থাকবে, সেই আশা করি।’’
বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দুই বাংলা এবং দুই দেশের সম্পর্ক বরাবরই ভাল। দু’দেশের বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে। আলোচনা ছিল সৌজন্যমূলক।’’ তিস্তা বা এনআরসি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান মমতা।
তাঁদের মতে, কলকাতায় এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের অবদানের কথা এর আগে বহু বার বলেছেন বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামি লিগের শীর্ষ নেতারা। সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। শেখ হাসিনাও তাঁর বাবা মুজিবুর রহমানের সংগ্রামে ভারতের সাহায্য-সমর্থনের কথা স্মরণ করেছেন। কিন্তু এখন এনআরসি-র আবহে যখন বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তাঁদের চিহ্নিত করে সে দেশে ফেরত পাঠানো হবে কি না, তা নিয়ে ভারতে জল্পনা শুরু হয়েছে, তখন মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলির কথা মনে করিয়ে দেওয়ার পিছনে কূটনৈতিক কৌশল রয়েছে।

Find out more: