নির্দিষ্ট সময়ের কিছু আগেই সুন্দরবনে আছড়ে পড়ল বুলবুল। যদিও আছড়ে পড়ার কিছু আগে কিছুটা শক্তি হারিয়েছে। ফ্রেজারগঞ্জ, সাগরদ্বীপ, বকখালি হয়ে স্থলভাগে ঢোকার পর অতি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় থেকে শুধুমাত্র ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে আকার নেয় বুলবুল। আগামী তিন-চার ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চলবে সুন্দরবন বদ্বীপ এলাকাতেই। তারপর বুলবুল এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের খেপুপাড়ার দিকে। স্থলভাগে ঢোকার সময় তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটারের আশেপাশে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানিয়েছেন, ‘‘ নির্দিষ্ট সময়ের কিছু আগেই বুলবুল আছড়ে পড়েছে সুন্দরবন বদ্বীপ অঞ্চলে। তবে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি গভীর রাত অবধি চলবে ওই এলাকায়। এরপর বাংলাদেশ হয়ে ত্রিপুরার দিকে এগিয়ে যাবে বুলবুল।
বুলবুল নিয়ে নবান্নের কন্ট্রোল রুমে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁদের মধ্যে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৩৬৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে।
রাজ্য জুড়ে ব্যবস্থা করা হয়েছে ২১৫ টি রান্নাঘরের। ত্রাণ শিবিরে মজুত করা হয়েছে পরিস্রুত পানীয় জলের ২ লক্ষ ৪০ হাজার পাউচ।
বঙ্গোপসাগরের দিকে আসা একটি ক্রুজকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মৌসুমী দ্বীপে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন। তাঁদের কাছে বুলবুল নিয়ে খবর ছিল না।
প্রায় ১০০ থেকে ২০০ কিমি এলাকায় তাণ্ডব চালায় বুলবুল। বহু জায়গায় ভেঙে পড়েছে কাঁচা ঘর। নষ্ট হয়েছে কৃষিজমি।
বিপর্যস্ত হয়েছে কাঁথি, রামনগর, নন্দীগ্রাম, খেজুরির বেশ কিছু অংশ।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, নবান্নে রাতভর সজাগ থাকবে কন্ট্রোল রুম। সেখানে উপস্থিত পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা।
ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, তা সরেজমিনে পরীক্ষা করা হবে। তার জন্য ব্যবহার করা হবে ড্রোন ‘দুর্দান্ত’-কে।
আয়লার পরে যে ত্রাণশিবিরগুলি খোলা হয়েছিল, সেগুলি কাজে লাগানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বুলবুলের প্রভাব কেটে যাওয়ার পরেও যাঁরা ফিরে যাওয়ার সমস্যা থাকবে, তাঁরা ত্রাণ শিবিরে থাকতে পারবেন। তার পরে তাঁদের পুনর্বাসন নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে সরকার।
রাত সাড়ে আটটায় কলকাতায় ঝড়ের গতি রেকর্ড হয়েছে ৫৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
ঝড়খালিতে তুমুল বৃষ্টি। ঝোড়ো হাওয়া।
অতি ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বুলবুল।
সুন্দরবন এলাকায় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফ্রেজারগঞ্জ-বকখলিতে ক্ষতির সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।
এ রাজ্যের উপকূলে ঢুকে পড়ল অতি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় বুলবুল।
ফ্রেজারগঞ্জ-সাগরদ্বীপ হয়ে এ রাজ্যের স্থলভাগে ঢুকে পড়ল সে।
আগামী ২ ঘণ্টায় বৃষ্টি আরও বাড়বে উপকূলে।
এক ঘণ্টা পর কলকাতায় ঝোড়ো হাওয়া বাড়বে।
কলকাতা, হুগলি, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনায়ে বৃষ্টি চলবে আগামী ২৪ ঘণ্টা।
রবিবার দুপুরের মধ্যে বুলবুলের শক্তিক্ষয় হবে।
বাংলাদেশ হয়ে ত্রিপুরার দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বুলবুলের।
সাগরদ্বীপে বহু জায়গায় কাঁচা বাড়ি, গাছপালা ভেঙে পড়েছে বলে খবর।
ট্রেন লাইনে গাছ পড়ে বাতিল হয়েছে শিয়ালদহ-লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল।
হাওড়া, পাঁশকুড়া এবং দিঘার মধ্যেও তিনটি লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এ রাজ্যের উপকূল এলাকা থেকে প্রায় দেড় লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। এ দিন সকাল থেকেই উপকূলে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে পাল্লা বেড়েছে বৃষ্টি। ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল এলাকায়। সে সব জায়গায় তৈরি রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তারা।
কলকাতাতেও চলছে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া। নবান্ন থেকে গোটা বিষয়টি তদারকি করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও রয়েছেন পুরসভার কন্ট্রোল রুমে।