সিনেমার জগতে এখন থ্রিলারের রমরমা।মৈনাক ভৌমিকের সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘বর্ণপরিচয়’ সেরকমই একটি ছবি।এই ছবিতে তুখোড় পুলিশ অফিসার পঞ্চাননের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যিশু সেনগুপ্ত এবং অপরাধী অর্ক ভট্টাচার্যের ভূমিকায় অভিনয় করেছন আবীর। ছবির প্রতিটি দৃশ্যে যিশু এবং আবীর নিজেদের জাত চিনিয়ে দিয়েছেন। তবু যিশু সেনগুপ্তর অভিনয় দিনকে দিন যেন গভীর আলো ছড়াচ্ছে দর্শকের মধ্যে।
একটি বিমা কোম্পানিতে কাজ করতেন অর্কর স্ত্রী স্নেহা। সেই মালিকের বীভৎস ষড়যন্ত্রে কোম্পানির সমস্ত কর্মী আগুনে পুড়ে মারা যান। গর্ভবতী স্নেহার এই অমানবিক মৃত্যুতে অর্ক ওরফে আবীরের মধ্যে প্রতিহিংসার আগুন জ্বলে ওঠে। এই চরম গণহত্যার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিল, প্রত্যেককে অভিনব পদ্ধতিতে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন অর্ক ভট্টাচার্য। চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে অর্কর জীবিকা এবং পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে দর্শককে আগে জানাননি পরিচালক, তা হলে সাসপেন্সটি মাঠে মারা যেত। অর্ক কার্যত দুঁদে পুলিশ অফিসার পঞ্চাননকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তাঁকে ধরবার জন্য। এমনকি ফোন করে তাঁর পরবর্তী শিকারের সম্পর্কে ক্লু-ও দেন। কিন্তু মদ্যপ পঞ্চানন বারবার নিজেকে শেষ করে দেওয়ার অছিলায় তা ধরতে পারেন না। এর ফলে মদ্যপান এবং ডিপ্রেশন দুই-ই তাকে কার্যত গৃহবন্দি করে ফেলে। এই সময় জীবনের কোনও ম্যাজিকে একমাত্র সন্তান গোগোলের জন্য আবার জীবনের দিকে ফিরে তাকান পঞ্চানন। ছোট্ট গোগোলের ভূমিকায় দীপ্র সেন চমৎকার।
এই ছবিতে কে খুনী, দর্শককে প্রথম থেকেই বলে দেওয়া হয়। কিন্তু তীক্ষ্ণ বুদ্ধিধর পঞ্চানন ওরফে যিশু সেনগুপ্ত এবং তাঁর তামাম পুলিশ দফতর জানে না কে অপরাধী। এখানে পরিচালক মৈনাক ভৌমিক অপরাধীকে ধরতে না পারার কৌশলটির মধ্যেই সাসপেন্স রেখেছেন। ক্রাইম থ্রিলারের ক্ষেত্রে এই সমীকরণটার মধ্যে নতুনত্ব আছে।এককথায় প্রত্যেকেই এখানে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।