মাত্র ৪ বছর বয়সে বিনোদন জগতে পা রেখেছিলেন। বিজ্ঞাপনে শাহিদ কপূরের পাশে দাঁড়িয়ে বলতেন, ‘আই অ্যাম আ কমপ্ল্যান গার্ল’। তখন থেকেই নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন। শৈশবের সেই স্বপ্ন পূর্ণও হয়েছিল। নায়িকা হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে সবে পায়ের তলায় জমি শক্ত করছিলেন। কিন্তু বিয়ের পরে ইন্ডাস্ট্রি থেকে উধাও হয়ে গেলেন আয়েশা তাকিয়া।
আয়েশার জন্ম ১৯৮৬ সালের ১০ এপ্রিল। তাঁর বাবা নিশীথ গুজরাতের বাসিন্দা ছিলেন। মা, ফার্দিয়া ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত। চেম্বুরের সেন্ট অ্যান্থনিজ গার্লস হাই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী আয়েশা মাত্র ১৫ বছর বয়সে ফাল্গুনি পাঠকের মিউজিক ভিডিয়ো ‘মেরি চুনর উড় উড় যায়’-এ অভিনয় করেন। এরপর আরও বেশ কিছু মিউজিক ভিডিয়োয় অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা পান।
২০০৪ সালে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ। তিনি সই করেন ‘শোচা না থা’ ছবিতে। কিন্তু সেই ছবির কাজ শেষ হতে দেরি হয়। ছবি মুক্তি পায় ২০০৫ সালে। তার আগেই মুক্তি পেয়ে যায় আয়েশার আর একটি ছবি ‘টারজান: দ্য ওয়ান্ডার কার’। ফলে সেটি-ই তাঁর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি। এই ছবিতে নবাগতা আয়েশা অভিনয়ের জন্য পুরস্কৃত হন।
এরপর আয়েশার পরপর কয়েকটি ছবি বক্সঅফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। তারপর তিনি অভিনয় করেন নাগেশ কুকুনুড়ের পরিচালনায় ‘ডোর’-এ। এই ছবিতে এক রাজস্থানি গ্রাম-বধূর ভূমিকায় আয়েশার অভিনয় পুরস্কত হয়।
‘ডোর’-এর পরে অনুরাগীরা আশা করেছিলেন আয়েশাকে অন্যরকমের ভূমিকায় আরও বেশি দেখা যাবে। কিন্তু তাঁকে দেখা যায় তথাকথিত বলিউডি নায়িকার ভূমিকাতেই। তাঁর অভিনীত অন্যান্য ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘সালাম-এ-ইশক’, ‘ওয়ান্টেড’ এবং ‘মোড়’। কিন্তু কোনও ছবিতেই তিনি ‘ডোর’-এর উচ্চতায় পৌঁছতে পারেননি।
২০০৯ সালে সমাজবাদী পার্টির নেতা আবু আজমির ছেলে ফারহান আজমিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরে আয়েশার মাত্র দু’টি ছবি মুক্তি পায়। ২০১১ সালের পর থেকে তাঁকে আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি। মাত্র তেইশ বছর বয়সে বিয়ে করার কোনও অনুতাপ নেই নায়িকার। এ কথা নিজেই জানিয়েছেন আয়েশা। তাঁর সারাদিনের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে ছ’বছর বয়সি শিশুপুত্র।
সিনেমায় অভিনয় থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরে কিছু টেলিভিশন রিয়েলিটি শো-তেও অংশ নিয়েছিলেন আয়েশা। কিন্তু সেও নামমাত্র। বিয়ের পরে সে ভাবে কেরিয়ারকে প্রাধান্যই দেননি অতীতের কমপ্ল্যান-বালিকা।
কাজ থেকে দূরে থাকলেও নিয়মিত শরীরচর্চা করেন আয়েশা। কয়েক বছর আগে শোনা গিয়েছিল, তিনি ঠোঁটে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। কিন্তু সেই দাবি উড়িয়ে দেন আয়েশা।
পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে যেতে ভালবাসেন আয়েশা। শপিং ডেস্টিনেশের জন্য তাঁর প্রিয় ছুটি কাটানোর জায়গা হল ইতালি, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, লন্ডন এবং মালয়েশিয়া। অভিনেত্রী না হলে তিনি নাকি ট্র্যাভেল শো-এর সঞ্চালক হতেন।
পশুপ্রেমী আয়েশা পেটা-র সদস্য। বহু দিন ধরেই তিনি ভেগান। তবে রান্না করতে ভালবাসেন না চা-ভক্ত আয়েশা।