আমি তা দেখে ভীষন খুশি। কোম্পানি টার নাম ক্রাউড-লিংক ইন্ডিয়া। সেই নোটিফিকেসনের, ম্যাসেজ টা পড়লাম। দেখি একজন কনট্যাক্ট পারসনের নাম ও দেওয়া আছে। নাম রোহিনি দত্ত। আমি সঙ্গে -সঙ্গে সেই রোহিনি নামে স্টাফ কে ফোন লাগালাম। ফোন টা রিসিভ হতেই, আমি বললাম, " আমি সায়ন বলছি ম্যাম। আমি আপনাদের কোম্পানি তে, জবের জন্য এ্যাপলাই করেছিলাম। আমার সিভি টা সিলেক্ট হয়েছে। আমাকে সেই মহিলাটি সরসে সরল গলায় বলল, " দেখ, সায়ন তোমার জন্য একটা ব্যাঙ্কের চাকরি ঠিক করা হয়েছে। পনের হাজার টাকা মাইনে।
ডিউটি দশটা থেকে চারটে। তোমার নীয়ার বাই লোকেশনেই দেওয়া হবে।" আমি আনন্দের সাথেই আরও জিগ্যেস করলাম , "আর কি কি লাগবে? " উনি অকপট ভাবে বলল, " একটা সিভি, একটা পাসপোর্ট সাইজ ফটো, আর এক হাজার টাকা।"এই হাজার টাকার কথা শুনে, খুশিতে ভরে ওঠা মন , কেমন যেন চুপসে গেল। আমি টাকাটা দেওয়ার কারন জিগ্যেস করতেই , বলল, " আমরা যে , আপনাকে কাজ টা দিচ্ছি, সেইজন্য কোম্পানিকে টাকাটা প্রোভাইড করতে হয়। তাহলে কালকেই চলে আসুন। চিন্তা নেই আপনার চাকরি টা নিশ্চিত। বলে ফোনটা কেটে দিল।আমি এখান ওখান থেকে সেই টাকাটা, জোগাড় করে, পরের দিন অফিস গেলাম।
রিসেপসনিস্ট কাউন্টারে টাকাটা আগে জমা করতে বলল। আমি যথারীতি জমা করে দিলাম। তারপর আমাকে , ইন্টারভিউ তে ডাকা হল। এত কঠিন কঠিন প্রশ্ন করা হল যার দু-একটা ছারা আমি একটারও উত্তর দিতে পারলাম না । আমায় সাথে সাথে রিজেক্সন করা হল। বলল, " বাড়িতে গিয়ে, ভাল করে , প্রিপেরেশন নিন দুদিন পর বাই ফোন ফাইনাল ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। আমি বাড়ি তে পৌছে খুবই ভালো করে বই - পত্র ঘাটলাম। ঠিক দুদিন পর আমাকে আবার সেই কঠিন কঠিন প্রশ্ন করা হল যার উত্তর আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব হল না ।
আমাকে রিজেক্সন করল। তারপর আমার কনট্যাক্ট পার্সন কিছুক্ষন পরই আমায় ফোন করে বলল, "তুমিতো কিছুই পারলেনা। তবে একটা উপায় আছে । তুমি যদি দশ হাজার টাকা জমা দাও, তাহলে কোনো ইন্টারভিউ দিতে হবে না। সরাসরি নিয়োগ হয়ে যাবে। " আমি বললাম, " আমার নিয়োগ টা করিয়ে দিন আমার মাইনে থেকে কেটে নেবেন।" - না এখানে আগে টাকা জমা দেবে, তারপর কাজ দেওয়া হবে। জমা দিলে ফোন কোরো। বলেই ফোনটা কেটে দিল। আমার হাজার টাকা চোট হয়ে গেল। এরকম আমার মত কত বেকার ছেলেরা এই কোম্পানি গুলির ফাঁদে পরে জীবন নষ্ট হচ্ছে। সরকারের কোন ভ্রু-ক্ষেপ নেই।।