
লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া বর্তমান সরকার।সামনেই আছে পুরভোট। আর সেই লক্ষেই কোমর বেঁধে নামতে চলেছে কোলকাতা পুরসভা। সেই লক্ষ্যেই এ বার মধ্যরাতেও নাগরিকদের অভিযোগ শুনতে বিশেষ পরিকল্পনা করছেন পুর কর্তৃপক্ষ। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই শুধু নয়, নাগরিকেরা যাতে নিজেদের সমস্যার কথা মধ্যরাত অথবা গভীর রাতেও ফোনের মাধ্যমে পুরসভার কানে তুলতে পারেন, সে জন্যেই এই ভাবনা। বিল্ডিং সংক্রান্ত অভিযোগ হোক অথবা জঞ্জাল জমা বা নিকাশি সংক্রান্ত সমস্যা— যে কোনও পুর পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ যাতে জানাতে পারেন নাগরিকেরা, তার জন্য ২৪X৭ ফোন পরিষেবা চালু করতে চাইছেন কর্তৃপক্ষ। গভীর রাতে নাগরিকদের সেই ফোন ধরতে কোন আধিকারিকের কবে ‘ডিউটি’ পড়বে, তা নিয়েও প্রাথমিক খসড়া তৈরি হচ্ছে।
পুর কমিশনার খলিল আহমেদের বক্তব্য ‘‘২৪ ঘণ্টাই নাগরিকেরা নিজেদের সমস্যার কথা যাতে জানাতে পারেন, সেই মতো পরিকল্পনা করছি। নাগরিকেরা সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল বা আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে যাতে নিজেদের সমস্যা জানাতে পারেন, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। কবে এই ব্যবস্থা চালু করা যায়, তা দেখছি।’’
বর্তমানে পুরসভার দিন-রাতের একটি কন্ট্রোল রুম আছে, যেখানে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ফোন করতে পারেন নাগরিকেরা। কিন্তু নতুন এই ব্যবস্থায় যে কোনও সময়ে পুর আধিকারিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ থাকছে। টেলিকম সংস্থাগুলি গ্রাহকদের সঙ্গে যে ব্যবস্থার মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করে বা অভাব অভিযোগ শোনে, সেই একই ‘মডেল’ এ বার এখানে চালু করতে চাইছে পুরসভা।
প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘পুরোটাই রাজনৈতিক নাটক। কাজ করছি সেটা আবার দেখিয়ে করতে হবে না কি! রাজনৈতিক চাপে পড়ে এখন এসব করছে তৃণমূল পুরবোর্ড।’’ প্রায় একই সুর বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিতের গলাতেও— ‘‘ভোটে হেরে যাওয়ার ভয়ে এখন পুরসভা এসব করছে। লোক দেখানো নাটক এসব!’’
পুরসভার এই নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েও কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়ের সতর্কবার্তা, ‘‘এই প্রথম পুরসভা সরাসরি নাগরিকদের কথা শুনছে। সেটা নিশ্চয়ই স্বাগত। কিন্তু শুধু শুনলেই হবে না, কাজ যাতে হয়, সেটা দেখতে হবে।’’
নতুন উদ্যোগ কতটা কার্যকরী হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।