কোলকাতা সমেত দক্ষিণবঙ্গের প্রাকৃতিক প্রাচীর হল ম্যানগ্রোভ অরণ্য। যা অনেকদিন ধরেই বিভিন্ন আক্রমণের মুখে পড়ে ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে। গত ডিসেম্বরে রাজ্যের পূর্ত দফতরের বিরুদ্ধেই গঙ্গাসাগরের উপকূলে ম্যানগ্রোভ নষ্ট করে হেলিপ্যাড তৈরির অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় পরিবেশ আদালত সেই কাজের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করেছে। এ বার মাটি কেটে ম্যানগ্রোভ নষ্ট করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির অভিযোগ উঠল গঙ্গাসাগরেই।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে ও সামুদ্রিক ঝড়ঝাপটা থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে ম্যানগ্রোভ এক বিশাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্থানীয় সূত্রের খবর, হেলিপ্যাডের কাছাকাছি সমুদ্রপাড় থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল কেটে আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয় প্রায় এক বছর আগে। গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্যদের চেয়ারম্যান তথা সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘সমুদ্রতটের কাছাকাছি আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির কথা আমি জানতাম না। খবর পেয়ে ১৭ অগস্ট ঘটনাস্থল দেখতে গিয়েছিলাম। পরিবেশবিধি না-মেনে যিনি বা যাঁরা ওই বাড়ি তৈরির কাজে যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ব্যাপারটি সকলেই স্বীকার করে নিয়েছেন এবং এর জন্য যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য চিন্তা ভাবনাও শুরু করেছেন। গঙ্গাসাগর ব্লকের ভূমিরাজস্ব আধিকারিক কৃষ্ণগোপাল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘লোকবল কম থাকায় বিষয়টি আমাদের চোখে পড়েনি। গঙ্গাসাগরের ন’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ন’জনের জায়গায় মাত্র দু’জন ‘রেভিনিউ অফিসার’ (রাজস্ব আধিকারিক) আছেন।’’কিন্তু তা স্বত্বেও কিভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করে আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির কাজ গত একবছর ধরে হচ্ছে সেটা প্রশাসনের নজর কিভাবে এড়িয়ে গেলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গঙ্গাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হরিপদ মণ্ডল বলেছেন ‘‘কয়েক জন উদ্বাস্তুর জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির কাজ চলছিল। প্রচুর গাছ কেটে বাড়ি তৈরি চলছে বলে যা বলা হচ্ছে, তত বেশি গাছ কাটা হয়নি। কোনও অন্যায় করিনি,’’