২ অক্টোবর ২০১৪ সাল। দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন বিষ্ফোরণে কেঁপে বর্ধমানের খাগড়াগড়ের একটি দোতলা বাড়ি। না হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নয়, জঙ্গি কার্যকলাপের চিহ্ন মোছার কাজ করছিল দুই মহিলা আলিমা ও গুলশানরা বিবি। তারপরই প্রকাশ্যে আসে এ রাজ্যে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (JMB)-এর জঙ্গি কার্যকলাপের ছাপ। ঘটনায় একে একে ৩১ জনকে গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)।

প্রায় পাঁচ বছর বর সাজা ঘোষণা করল আদালত। এর আগে ২৩ অগাস্ট আলিমা ও গুলশানরা বিবি সহ মোট ১৯ জনকে কাঠগোড়ায় তোলা হয়। বিচারক ১৯ অভিযুক্তকেই জিজ্ঞাসা করেন, তারা কারোর প্ররোচনায় দোষ স্বীকার করছেন কি না? অভিযুক্তরা সবাই জানায়, তারা বিনা প্ররোচনায় নিজেদের দোষ স্বীকার করছে। তারপরই এনআইএ বিশেষ আদালত ১৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। এদিন ছিল সাজা ঘোষণার দিন। অভিযুক্তরা পরিবারের কথা উল্লেখ করে সর্বনিম্ন সাজা ঘোষণার আবেদন জানায়। চূড়ান্ত বিরোধীতা করেন সরাকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায়। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত মুলতুবি করে দেন বিচারক। বিকেল চারটে নাগাদ সাজা ঘোষণা কথা জানান। পরিশেষে বিকেল পাঁচটা নাগাদ খাগড়াগড় বিষ্ফোরণ কাণ্ডে সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক।

৬ বছর জেল হল আলিমা ও গুলশানরা বিবি ও অসমের এক ছাত্রের। চার বাংলাদেশি দোষীকে ১০ বছরের সাজা কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল। বাকি ১২ জনের ৮ বছরের জেল হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত আবদুল হাকিম ও রেজাউল করিমের ৮ বছর জেল এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ১ বছরের জেল। শেখ রামতুল্লার ১০ বছরের জেল ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ১ বছর জেল। দোষী সাইদুল ইসলাম ও মহম্মদ রুমেলকেও ১০ বছরের জেল, একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

সাজা ঘোষণার পর বিচারক জানিয়েছেন, যারা পাঁচ বছর জেল খেটেছেন তাদের বাকিটা খাটলেই হবে। অর্থাত আলিমা ও গুলশানরা বিবির আর ১ বছর জেল খাটতে হবে। এই দু’জন খাগড়াগড় কাণ্ডে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত।

খাগড়াগড় কাণ্ডে চার্জ গঠন ও ট্রায়াল শুরু হয় ২০১৫ সাল থেকেই। মোট ৮০০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।  



Find out more: