অর্থমন্ত্রীর ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণের ঘোষণা, আর্থিক বৃদ্ধির হার পড়ে যাওয়া, আর এইসবের মধ্যেই আরও এক ধাক্কা খেল রাজধানী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নৃপেন্দ্র মিশ্র পদত্যাগ করেছেন।
মোদী যখন প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন তখনই খোঁজ শুরু হয়েছিল এই পদটির জন্য। উত্তরপ্রদেশ ক্যাডারের এই আইএএস-কে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি করার পরামর্শ নাকি দেন খোদ অমিত শাহই। তখনও মোদী তাঁকে ভাল চিনতেন না। তবু তাঁকে পদে বসান। তার জন্য নিয়মেরও বদল করেন। কারণ, নৃপেন্দ্র মিশ্র ছিলেন টেলিকম নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (ট্রাই)-এর চেয়ারম্যান। ট্রাই-এর নিয়ম অনুসারে অবসরের পর সরকারি পদ নেওয়া যায় না। বিরোধীরা এ নিয়ে শোরগোল তুললেও মোদী অনড় থাকেন নিজের অবস্থানে।
প্রধানমন্ত্রী সচিবালয় সূত্রের খবর, বিদায়ী ক্যাবিনেট সেক্রেটারি পি কে সিন্হাকে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী দফতরের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি নিয়োগ করা হয়েছে। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গউবা এখন নতুন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে স্পষ্ট হবে, এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্রর পদোন্নতি হবে, নাকি পি কে সিন্হাকে বসানো হবে নৃপেন্দ্রর জায়গায়?
স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী টুইট করে বলেছেন ‘‘২০১৪ সালে দিল্লি ও নৃপেন্দ্র মিশ্র— উভয়ই আমার কাছে নতুন ছিল। কিন্তু তিনি জানতেন দিল্লির শাসন-ব্যবস্থা। পাঁচ বছরে তিনি শুধু আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে সাহায্য করেননি, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতেও আমার সঙ্গী হিসেবে কাজ করে গিয়েছেন।’’নৃপেন্দ্র মিশ্র বিবৃতিতে বলেন ‘‘প্রধানমন্ত্রীর অধীনে দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ। পাঁচ বছর ধরে নিয়ত কাজ করেছি। এখন এগোনোর সময়। জাতীয় স্বার্থে মানুষের জন্যই কাজ করব। প্রধানমন্ত্রী দেশকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবেন।’’
অনেকের ধারনা প্রধানমন্ত্রীকে সব বিষয় না-জানিয়ে বাজেটকে স্বীকৃতি দেওয়ার খেসারত দিতে হল নৃপেন্দ্রকে।অশ্বিনী মহাজন টুইট করে লিখেছেন, ‘‘আমলাতন্ত্রের কাছে একটি অশনিসঙ্কেত। যে কাউকে সরানো হতে পারে। সুভাষ গর্গ কিংবা নৃপেন্দ্র মিশ্র।’’ আরএসএসের এক নেতা বলেন, ‘‘ভাল কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আমলাদের খোলা ছুট দিয়েছেন। কিন্তু আমলারা নিজেদের দায়িত্ব না বুঝে যদি ‘বাড়াবাড়ি’ শুরু করেন, এমনই হবে তার পরিণতি। নৃপেন্দ্র মিশ্রকে সরানোর পর নিশ্চয়ই বাকি আমলারাও সতর্ক থাকবেন।’’