ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ করতে গিয়ে বিপত্তি বৌবাজার এলাকায় প্রায় ১৮টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে । শুধু মাত্র মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণেই এটা ঘটেছে বলে অভিযোগ । গতকাল ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম , সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক নয়না দাস । আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সেখানে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন । তাদের সব রকম ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন ।
একই সঙ্গে আগামী কাল মঙ্গলবার নবান্নে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । সেই মত বৈঠক ডাকা হয়েছে । সেই বৈঠকে যাদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে চার জনের এক প্রতিনিধিদলকে ডাকা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, মাটির নীচে চলছিল ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। টানেল বোরিং মেশিন দিয়ে কাজ করার সময় ভূগর্ভস্থ জল ঢুকে বিপত্তি ঘটে। তার জেরে শনিবার থেকে বৌবাজারের দুর্গা পিতুরি লেন ও শাঁখারি পাড়া লেনের বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একাধিক বাড়ির বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়তে শুরু করে। রবিবারই ওই এলাকার ১৮টি বাড়ি থেকে মোট ২৮৪ জনকে সরিয়ে বাড়িগুলি খালি করে দেওয়া হয়। তাঁরা আপাতত হোটেলে রয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় সেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আগামিকাল মঙ্গলবার নবান্নে এই নিয়ে তিনি বৈঠক ডেকেছেন। সেই বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা ছাড়াও কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)-এর প্রতিনিধিরা থাকবেন। পাশাপাশি পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে চার জনের প্রতিনিধি ঠিক করে দিতে। তাঁরাও নবান্নের ওই বৈঠকে থাকবেন।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যখন এই সব কথা বলছেন, তখনও ক্ষোভ–উদ্বেগ প্রকাশ করতে থাকেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, তড়িঘড়ি করে বাড়ি ছেড়েছিলেন। কিছুই বাইরে বের করতে পারেননি। এমনকি, গুরুত্বপূর্ণ নথিও নয়। সেগুলি আনার জন্য বাড়িতে ঢুকতে দেওয়ার আর্জি জানান তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জীবন চলে গেলে আর ফেরত পাওয়া যাবে না। নথিপত্র কিছু নষ্ট হলে বা হারিয়ে গেলে সেগুলো তৈরি করে দেওয়া হবে।’’ পুলিশ–প্রশাসনের মাধ্যমে যদি সেগুলি বার করে আনা যায়, সেই অনুরোধও করেন তাঁরা। কিন্তু নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী তাতে সায় দেয়নি ।