বুধবার থেকে প্রতিবছরের মত এবছরও বর্ধমান শহরের টাউন হলে শুরু হল ১১তম প্রাক্ পূজা তাঁতবস্ত্র মেলা। মেলার উদ্বোধন করেন বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প দপ্তরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলাশাসক বিজয় ভারতী,সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু, রাজ্য বস্ত্র নিগমের ডিরেক্টর দেবযানী দত্ত প্রমুখরাও।
এদিন এই মেলায় হাজির হওয়া কালনা মহকুমার ধাত্রীগ্রামের টাঙ্গাইল বসাক তন্তুবায় সমবায় সমিতির সদস্য নির্মল বসাক জানিয়েছেন,তাঁতশিল্পীদের অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন ঘটাতে রাজ্য সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তার ফলে প্রায় ১১ বছর আগে তাঁতীদের যে অবস্থা ছিল তার থেকে অনেকটাই তাঁরা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ভর্তুকির টাকা প্রায় ১০ বছর ধরে বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন তাঁতীরা। যার পরিমাণ তন্তুবায় সমিতি অনুযায়ী আলাদা আলাদা।
নির্মল বসাক জানিয়েছেন, সরকারী তরফে এই ধরণের বিপণনের ব্যবস্থাপনায় সত্যিই তাঁতশিল্পের উন্নতি হয়েছে। সরাসরি খরিদ্দারদের সঙ্গে তাঁতীদের যোগ সাধন হচ্ছে। খরিদ্দাররা কি চাইছেন তা জানতে পারছেন তাঁরা। সেইমত তাঁরা কাপড় বোনার চেষ্টা করছেন। ফলও পাচ্ছেন হাতেনাতে। কিন্তু এরই পাশাপাশি গত প্রায় ১০ বছর ধরে এই ধরণের যে এক্সপো বা মেলায় তাঁতীদের জন্য সরকারীভাবে যে ১০ শতাংশ হারে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ভর্তুকি দিতেন তা দেওয়া বন্ধ হয়ে আছে। ফলে কমবেশী বিভিন্ন তন্তুবায় সমবায় সমিতির প্রচুর টাকা পাওনা রয়েছে। এই বকেয়া টাকা পেয়ে তাঁরা অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় দাঁড়াতে পারেন। কারণ তাঁতীদের সুবিধার্থে তৈরী হওয়া সমবায় সমিতিগুলিকে তাঁতীদের মজুরীবাবদ অর্থ মিটিয়ে দিতে হয়। আর উত্পাদিত কাপড় বিক্রি করে সেই টাকা তুলতে হয় সমবায় সমিতিকে।
নির্মলবাবু জানিয়েছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই মেলায় অংশ নেওয়ার জন্য ভর্তুকির টাকা না পাওয়ায় তাঁদেরই ভর্তুকিতে কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে কিছুটা হলেও তাঁরা চাপের মধ্যে পড়ছেন।টাউনহল প্রাঙ্গণে প্রায় ৩৮টি স্টল নিয়ে এবারের এই তাঁতবস্ত্র মেলার বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ২ কোটি টাকা। গত আর্থিক বছরে বিক্রি হয়েছিল ১ কোটি ৩০ লক্ষ ৫৭ হাজার ১৭৫ টাকা।