দেশের আর পাঁচটা মেট্রো শহরের মত বিদ্যুৎ বিল হয় না কলকাতার । এখানে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় সাধারণ মানুষকে । এটা জলের মত সত্য । আর সিইএসসি-র মিটার রিডিং কারচুপি হয়েই চলেছে । কলকাতার বাসিন্দাদের এই অভিজ্ঞতা কম বেশি সবার আছে । তাই সিইএসসি-র বিদ্যুত বিল ও পরিষেবা নিয়ে যে কোনো দল আন্দোলন করলে তা সফল হবে । বিজেপি এতদিন পর ধর্মীয় বিষয়টি ভুলে গিয়ে জনস্বার্থে আন্দোলনে নেমেছ ।
উপরোক্ত দাবিগুলিকে নিয়ে আজ সিইএসসি দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করার ডাক দিয়েছিল বিজেপি-র যুবমোর্চা ও মহিলা মোর্চা । ভিক্টোরিয়া হাউস অভিযান উপলক্ষে আজ বিজেপি-র মিছিলকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মধ্য কলকাতা । সেই মিছিল ঘিরেই এ দিন দুপুরে যুব মোর্চা এবং পুলিশের মধ্যে ধুন্ধুমার বাধল চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউতে। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে চালানো হল জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস। পুলিশের বিরুদ্ধে উঠল লাঠি চালানোর অভিযোগ। যুব মোর্চার অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে বিজেপির দাবি। পুলিশের পাল্টা দাবি, তাদেরও বেশ কয়েক জন কর্মী আহত হয়েছেন।
যুব মোর্চার ডাকে ‘চলো ভিক্টোরিয়া হাউস’-এর বিক্ষোভ মিছিল এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ রাজ্য বিজেপির সদর দফতরের সামনে থেকে শুরু হয়। বিজেপির দাবি, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে তাঁদের বেশ কিছু কর্মী সমর্থক রাস্তায় আটকে পড়েন। ফলে মিছিল শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। ওই মিছিলে ছিলেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম দুই সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু ও রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকার, মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়–সহ অনেকে। মিছিল চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউ ধরে ভিক্টোরিয়া হাউসের দিকে এগনোর সময় চাঁদনি চকের কাছে ই–মলের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয় ।
সায়ন্তন বসুর অভিযোগ, এই ঘটনায় তাঁদের ৫০–৬০ জন কর্মী–সমর্থক আহত হয়েছেন। বেশ কয়েক জনের মাথাও ফেটেছে বলে তাঁর দাবি। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের জখম গুরুতর।
সায়ন্তনের আরও অভিযোগ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। আমাদের মিছিলকে ভিক্টোরিয়া হাউসের আধ কিলোমিটার দূরে পুলিশ আটকে দিল। একটা শান্তিপূর্ণ মিছিলকে কেন অত দূরে আটকাবে, কেনই বা জলকামান, কাঁদানে গ্যাস নিয়ে তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়বে, বুঝলাম না। এ রাজ্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য বিন্দুমাত্র জায়গা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ছাড়তে চায় না।’’
কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) নীলকণ্ঠ সুধীর কুমার–সহ সেন্ট্রাল ডিভিশনের বিভিন্ন থানার ওসি এবং অ্যাডিশনাল ওসিরা এ দিন ঘটনাস্থলে ছিলেন। তাঁদের দাবি, বিজেপি প্রথমে বলেছিল, ই–মলের সামনে তাদের কর্মী–সমর্থকেরা মিছিল করে এসে জমায়েত করবেন। সেখান থেকে ১০ জনের প্রতিনিধি দল যাবে ভিক্টোরিয়া হাউসে। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘বাস্তবে ওই কর্মী–সমর্থকেরা ব্যারিকেড ভেঙে এগনোর চেষ্টা করলে আমরা জলকামান ব্যবহার করি। তার পরেও জমায়েত এগিয়ে আসলে, তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ বিজেপির দাবি, তাদের ৮৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।