ইয়েমেনের হুথি জঙ্গিরা ড্রোন হামলা চালিয়ে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘আরামকো’-র একটি তেলের খনি ও বিশ্বের সব চেয়ে বড় তেল শোধনাগার কেন্দ্রে আগুন লাগিয়ে দিল। ইরান সমর্থিত এই জঙ্গি সংগঠনটি হামলার দায় স্বীকার করে জানিয়েছে হামলার জন্য ১০টি ড্রোন ব্যবহার করেছিল তারা। এর আগেও সৌদিকে নিশানা করে এই ধরনের হামলা চালিয়েছিল হুথিরা। এ বার সংগঠনের এক মুখপাত্র বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, শনিবারের হামলাটি সৌদির অভ্যন্তরে হুথি বাহিনীর সবচেয়ে বড় অভিযান। যা সম্ভব হয়েছে ‘দেশের মানুষদের সহযোগিতায়’।
সৌদির অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীও জানিয়েছেন, ‘ড্রোন হামলার’ ফলে ভোর ৪টে নাগাদ আগুন লাগে আবকাইক ও খুরাইস এই দুই কেন্দ্রে। সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আরামকোর বাণিজ্যিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। হামলায় কেউ হতাহত হয়েছে কি না জানা যায়নি।
আরামকো জানিয়েছে, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার’ আবকাইক কেন্দ্র থেকে পরিশোধিত তেল পারস্য উপসাগর ও লোহিত সাগরের বিভিন্ন বন্দরের মাধ্যমে সারা বিশ্বে পাড়ি দেয়। প্রতি দিন গড়ে প্রায় ৭০ লক্ষ ব্যারেল তেল পরিশোধন করে এই কেন্দ্র। এর আগেও ২০০৬ সালে এটিকে নিশানা করেছিল আল কায়দার আত্মঘাতী জঙ্গিরা। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। খুরাইস খনিটি থেকে প্রতি দিন গড়ে ১০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল তোলা হয়। আরামকো-র মতে, এই খনিতে মজুত রয়েছে অন্তত দু’হাজার কোটি ব্যারল তেল।
গত চার বছর ধরে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইরান সমর্থিত হুথি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়ছে ইয়েমেন সরকার। সৌদি বাহিনীকে সামরিক সহায়তা করে আমেরিকাও। ২০১৫ সালে দেশের পশ্চিমের বেশিরভাগ অংশ দখল করে নেয় হুথিরা। রাজধানী সানা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ। যার জন্য সৌদি জোটের বিমানহানাকেই দায়ী করেছে হুথিরা। ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি জোটের হস্তক্ষেপের পর থেকেই ড্রোন ব্যবহার শুরু করে হুথি জঙ্গিরা। প্রথম দিকে সেগুলি তত উন্নত না হলেও রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা বা আরব দেশগুলির দাবি, পরের দিকে ইরানের মডেলের আদলে ড্রোন ব্যবহার শুরু করে হুথিরা। যদিও হুথিদের অস্ত্র সরবরাহ করার কথা বরাবরই অস্বীকার করেছে তেহরান।