আন্তর্জাতিক মহলের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে আবারও একবার নাম বদল করল পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইস-ই-মহম্মদ। সংগঠনের নতুন নাম রাখা হয়েছে ‘মজলিস উরাসা-ই-শুহুদা জম্মু ওয়া কাশ্মীর।’ মৌলানা মাসুদ আজাহার গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তার ভাই মুফতি আবদুল রউফ আসগারের হাতে এই সংগঠনের লাগাম উঠেছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এক দল জিহাদিকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছে মুফতি আবদুল। ভারতে নাশকতামূলক হামলা চালানোই তাদের লক্ষ্য।
পাকিস্তানের আশ্রয়ে থেকেই ভারতে নাশকতামূলক কাজকর্ম চালায় জইশ। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামা হামলাও তাদেরই মস্তিষ্কপ্রসূত। হামলার পর সংগঠনের চাঁই মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। তার পরেও পাকিস্তানেই রয়েছে মাসুদ। সে গুরুতর অসুস্থ বলে খবর। তবে এ ভাবে আন্তর্জাতিক জঙ্গিকে দেশের মাটিতে আশ্রয় দেওয়ায় কোপে পড়েছে পাকিস্তান। সন্ত্রাস দমনে পদক্ষেপ না করায় তাদের কালো তালিকাভুক্ত করেছে আন্তর্জাতিক আর্থিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)। অক্টোবরের মধ্যে সন্ত্রাস দমনের সমস্ত শর্ত পূরণ করতে না পারলে পাকাপাকি ভাবে ওই তালিকাতেই ঠাঁই হতে পারে তাদের, যার ফলে নেমে আসতে পারে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও।
ঠিক তার আগেই নাম পাল্টে ফেলল জইশ। পাকিস্তানকে নিষেধাজ্ঞার কোপ থেকে বাঁচাতেই তার এমন পদক্ষেপ করেছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। তবে নতুন নামকরণ হলেও জম্মু-কাশ্মীরকে অশান্ত করে তোলাই লক্ষ্য এই সংগঠনের। তাই নাম রাখা হয়েছে ‘মজলিস উরাসা-ই-শুহুদা জম্মু ওয়া কাশ্মীর’, যার অর্থ ‘কাশ্মীরি শহিদদের উত্তরসূরিদের জোট।’ তবে সংগঠনের কমান্ডার এবং সদস্যরা একই রয়েছে। তাদের নেতা মৌলানা আবিদ মুখতার ইতিমধ্যেই ভারত, আমেরিকা এবং ইজরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিয়েছে।
গোয়েন্দারা খবর দিয়েছেন যে পাক সরকারের মদতে বালাকোটের নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলি। একই সঙ্গে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মার্দান জেলার কউয়ত উল ইসলাম, আবু হুরাইরা ও আশাব উস সাফা, সোয়াবির আল সাফা জায়দা, নুসরতজাইয়ের ফৈয়জ উল কোরান এবং পঞ্জাব প্রদেশের ওকারা জেলার সাদ বিন মুয়াজ ও তেহফিজ উল কোরান মাদ্রাসাগুলিতে অল্পবয়সী পড়ুয়াদের সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ এবং মৌলবাদের শিক্ষা দিচ্ছে তারা। অগস্ট মাসে ভারত সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ এবং রাজ্য ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করার পরই নতুন করে উঠেপড়ে লেগেছে তারা। ভাওয়াল এবং জামরুদের প্রশিক্ষণ শিবিরে জঙ্গিদের কাশ্মীরে জিহাদের জন্যই প্রস্তুত হতে বলা হয়েছে।