মঙ্গলবার বীরভূমের সিউড়িতে সংগঠনের আমন ও একতা সম্মেলন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জমিয়াতে উলেমা হিন্দের রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, “বিজেপি আর আর.এস.এস বাংলায় এনআরসি নিয়ে ইট মারলে পাটকেল খেতে হবে।” তাছাড়াও তিনি এদিন অভয়বার্তা দিয়ে বলেন, “বাংলায় এন.আর.সি কোনভাবেই চালু হবে না আর সাধারণ মানুষের হয়রানি রুখতে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা করবে তার সংগঠন। ”অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি নুরে আলম চৌধুরী, সংগঠনের জেলা সভাপতি আনিসুর রহমান সহ জেলা ও অন্যান্য রাজ্য নেতৃত্ব।
এনআরসি আতঙ্কে পশ্চিম বাংলায় বেশ কয়েকজন আত্মঘাতী হয়েছে বলে খবর। সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে তা দূর করতে উদ্যোগী হল জমিয়তে উলামা হিন্দ। সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই কলকাতায় সাধারণ মানুষকে আইনি সহায়তার জন্য লিগাল সেল খোলা হয়েছে। কলকাতার পাশাপাশি বীরভূম ও অন্যান্য জেলাতেও খোলা হচ্ছে। এখান থেকে সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হবে। পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক এবং ক্লাবগুলোকে এনআরসি বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সহায়তা প্রদান করার জন্য আহ্বান করেছেন।এদিন সিদ্দিকুল্লা সাহেব আরও বলেন, “আসামের মানুষ বিজেপিকে পাটকেল দিতে পারেনি কিন্তু বাংলার মানুষ সেটা পারবে। অসমের নাগরিকত্ব জন্য এন.আর.সি চুক্তি ছিল কিন্তু বাংলার সেটা নেই। পরিবারের কোনো কাগজপত্র নিয়ে আটকে গেলে আমরা আপনাদেরকে যেকোনো ভাবে সহায়তা করবো। কলকাতা উচ্চ আদালতের সাড়ে সাতশ আইনজীবী আছে তাদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে তারা একটি আইনি সেল করেছেন। রাজ্যে ৬৯০০০ আইনজীবী আছেন। তারাও আমাদের সঙ্গে আছেন। বীরভূমে সেই আইনি সেল করা হবে। আমরা অভয় দিচ্ছি কোন বাঙালের গায়ে হাত আমরা দিতে দেবো না। এন.আর.সি হবেনা কিন্তু আমাদের নিজের কাগজপত্র ঠিক করে রাখবো।
আসামের এখনো চার লক্ষ মানুষ আছে যারা কোনো কাগজপত্র দাখিল করতে পারেনি তারা কিন্তু ভারতবর্ষের ভূমিপুত্র। তাদের কাগজপত্র হয় বন্যাতে বা ঘর ভেঙে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।”আসামের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ” আসামের ১৯ লক্ষ এনআরসিতে বাদ পরা মানুষের মধ্যে ১২ লক্ষই হলো বাঙালি। তাদের পাশে আমরা আছি। আমাদের যে আইনি সহায়তা কেন্দ্র আছে তা ছুটির দিন বেলা ১০ টা থেকে ১১ টা এবং প্রতিদিন রাত্রি আটটা থেকে ফোনে সহায়তা করবেন। সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হবার কোন কারণ নেই। এদেশ থেকে কাউকেই বের করে দেওয়া যাবে না। আমাদের সংগঠন মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, আদিবাসী সবার সঙ্গেই আছে।”এছাড়াও তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রথমেই বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন বাংলায় এন.আর.সি হবে না।”


Find out more: