সারদা কাণ্ডে অভিযুক্ত গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল আদালত। চার দিন ধরে শুনানির পর অবশেষে মঙ্গলবার ওই মামলার রায় ঘোষণা করে বিচারপতি শহিদুল্লা মুন্সি এবং বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজীব কুমারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্ট জানিয়েছে, রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে তাঁকে ৪৮ ঘণ্টা আগে নোটিস দিতে হবে। দু’জন জামিনদার-সহ ৫০ হাজার টাকা বন্ডে আগাম জামিন মঞ্জুর করা হয় রাজীবের। তবে, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদনের রাস্তা খোলা রয়েছে সিবিআইয়ের কাছে। এ দিন রায় ঘোষণার সময়, জানিয়ে দেওয়া হয় রাজীবকে যদি গ্রেফতার করা হয়, তা হলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে জামিন পেয়ে যাবেন। আগাম জামিন মঞ্জুর করা হলেও, কলকাতা ছেড়ে রাজীব যেতে পারবেন না বলেও রায়ে উল্লেখ রয়েছে বলে হাইকোর্ট সূত্রে খবর।
যদিও সিবিআইয়ের আইনজীবী সওয়ালের সময় জানিয়ে ছিলেন, রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে জেরার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ তাঁকে ৮ বার তলব করা হলে মাত্র দু’দিন তিনি হাজিরা দিয়েছিলেন। তা-ও ‘রক্ষাকবচ’ থাকার সময়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি শিলং-এ গিয়েছিলেন। তখন তাঁকে প্রায় ৪০ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছিল। কিন্তু রক্ষাকবচ উঠে যাওয়ার পর, তিনি হাজিরা দেননি। তাঁকে নোটিস দেওয়া হলেও, হাজিরা না দিয়ে ‘পালাতক’ ছিলেন। যদিও হাইকোর্ট মনে করছে, রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে জেরার কোনও প্রয়োজন নেই।
কলকাতা হাইকোর্টেই রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে যে ‘রক্ষাকবচ’, তা উঠে যায়। এর পর রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি হাজারি না দিয়ে ‘আত্মগোপন’ করে ছিলেন। এর পর তিনি এমপি-এমএল কোর্ট, বারাসত জেলা আদালত এবং আলিপুর জেলা ও দায়রা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানান। কিন্তু তিন আদালতেই আবেদন ধাক্কা খায়।
তার পরই গত সোমবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁর স্ত্রী সঞ্চিতা কুমার। বুধবার এই মামলার প্রথম শুনানি শুরু হয়। শুক্রবারও এক দফা শুনানি হয় সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি শেষ হয়। তবে ওই দিন রায়দান স্থগিত রাখে ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগে গত তিনদিন ধরে রাজীব কুমারের আগাম জামিনের শুনানি চলছিল আদালতে। সোমবার সকালেও রুদ্ধদ্বার কক্ষে, শুনানি শুরু হয়। সেখানে সিবিআইয়ের আইনজীবীরা তাঁর জামিনের বিরোধিতা করলেও, এ দিনই রায় ঘোষণা হয়ে যাবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু রায়দান স্থগিত করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।