রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারকে আগাম জামিন দিল কলকাতা হাইকোর্ট । আর সিবিআই কার্যত রাজীব মামলায় অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গেল । বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে সিবিআই রাজীব কুমার গ্রেফতার করার জন্য যেভাবে তল্লাশী চালিয়েছে তা এক কথায় নজীরবিহীন । সারদা-কাণ্ডে রাজীব কুমারকে আট বার তলব করেছিল সিবিআই। ‘রক্ষাকবচ’ থাকাকালীন মাত্র দু’বার হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। কলকাতা হাইকোর্টে সেই ‘রক্ষাকবচ’ উঠে যেতেই সিবিআই তাঁকে হেফাজতে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু সন্ধান তো মেলেইনি, উল্টে রাজীব নিরুদ্দেশে থেকেই ‘গ্রেফতারি এড়ালেন’। সিবিআই হন্যে হয়ে তাঁর পিছু ছোটে কার্যত নিজেদেরকেই খেলো করে তুলেছে ।
কিন্ত রাজীব কুমারের হদিশ পাওয়া যায়নি । বরং তিনি অন্তরালে থেকে যেভাবে সিবিআই-র সঙ্গে আইনি লড়াই করে গেছেন তাতে তাঁর দূরদর্শীতা প্রকট হয়ে ধরা পড়েছে । কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ রক্ষাকবচ তুলে নেওয়ার পর তিনি প্রথমে বারাসত আদালত এবং পরে আলিপুর আদালতে জামিনের আবেদন করেন । কিন্ত আলিপুর আদালত তার আবেদন খারিজ করে দেয় । সেই বিচারক রায়ে বলেন, রাজীব কৃমারকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা উচিত সিবিআই-র । এরপর রাজীব কুমার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিসন বেঞ্চে জামিনের আবেদন করেন । সেই আগাম জামিনের মামলায় আজ ডিভিসন বেঞ্চ ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে জামিন দিয়েছে ।
কলকাতা হাইকোর্টের  শহিদুল্লা মুন্সি এবং বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার রায় দিতে গিয়ে বলেছেন , রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই। জিজ্ঞাসাবাদের দরকার হলে ৪৮ ঘণ্টা আগে নোটিস দিয়ে জানাতে হবে। যদিও নিম্ন আদালতের মতোই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকেও সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে জেরার প্রয়োজন রয়েছে।
প্রথম থেকেই রাজীব মামলা নিয়ে কৌতূহল ছিল। ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানির আগে কড়া মন্তব্য শুনিয়ে বলেছিল, রাজীব কুমারকে আত্মসমপর্ণ করতে। এর পর চার দিন শুনানি হয়েছে। কিন্তু মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। শেষ পর্যন্ত সোমবার রায় রাজীব কুমারের পক্ষেই গেল মনে করছে আইনজীবী মহল। এই রায়ের পর রাজীবকে ফের নোটিস না পাঠিয়ে আইনি পথেই এগোতে চাইছে সিবিআই। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে দিল্লির সদর দফতর থেকে আসা নির্দেশের উপরে।


Find out more: