“ সংখ্যালঘু ও মাদ্রাসা শিক্ষা সর্বোপরি সংখ্যালঘুদের সার্বিক উন্নয়ন কল্পে মমতা সরকার বিশেষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি বললেই চলে । আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউটাউন ক্যাম্পাস , ইমাম মোয়াজ্জিনদের ভাতা ও ধর্মীয় অনুষঙ্গ যুক্ত ভাষার ও প্রতীকের ব্যবহার ছাড়া প্রায় সবই পূর্বতন সরকারগুলির প্রকল্প । মাদ্রাসা শিক্ষাকে তো তৃণমূল সরকার ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে । সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষার উৎকর্ষ সাধনে যা কিছু শুভ প্রচেষ্টা সবই তো কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রচিত হয়েছিল । ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা , ৯০০টি মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্র , ২০০টি নিউ সেট আপ মাদ্রাসা , মাদ্রাসা ডিরেকটোরেট সহ মাদ্রাসা শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন , শিক্ষক চয়নের ক্ষেত্রে কমিশন গঠন সর্বোপরি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় অপরদিকে কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের পরামর্শ ক্রমে ও আর্থিক সহায়তায় সংখ্যালঘু বিষয়ের সমস্ত ক্ষেত্রে নতুন নতুন পদক্ষেপ তারই নজীর । “ এই ভাষাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে আক্রমণ করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন ও সফল মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী ড. আবদুস সাত্তার । তিনি বর্তমানে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদকও বটে । কংগ্রেস বার্তার শারদীয়া সংখ্যায় “ সবার পিছে , সবার নিচে সাচার প্রতিবেদন : ‘ দুঃখিনী বর্ণমালা ‘ “ নামক এক প্রতিবেদনে ড. আবদুস সাত্তার দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের অবস্থান এবং রাজ্যের মমতা সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছেন ।
অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার মার্জিত অথচ পরিশীলিত ভাষায় মমতা সরকারের সমালোচনা করেছেন । যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি রাজ্যের সংখ্যালঘুদের সার্বিক উন্নয়নে ৯০ শতাংশ কাজ করে ফেলেছেন । আর সেই দাবিকেই ভুল প্রমাণ করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন সংখ্যালঘু মন্ত্রী ও প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক ড. আবদুস সাত্তার । তিনি লিখেছেন , বাম আমলে রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নে কাজ শুরু হয়েছিল তা সম্ভব হযেছিল কেন্দ্রে ‘ সংখ্যালঘু বিষয়ক ‘ মন্ত্রক গঠন এবং পঞ্চবাষির্কী পরিকল্পনার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ছাত্র-ছাত্রী বৃত্তি , পেশাগত প্রশিক্ষণ সহ এমএসডিপি প্রকল্প রচনার মধ্যে দিয়ে । এই বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে রাজ্যের ১২ টি জেলায় নানা ধরনের উন্নয়নের কাজ হয়েছে এবং আজও এই সরকারের মূলধন । অথচ এই সরকার প্রতিনিয়ত অস্বীকার করে চলেছে ।
অবশ্য তা ‘ দুঃখিনী বর্ণমালা‘ হয়ে জেগে আছে । তিনি আরও লিখেছেন , আজও নানা প্রশ্নবাণে এই সরকারকে বিদ্ধ করতে চায় । তাই সময় এসেছে কী হয়েছিল আর কী হচ্ছে , নির্মোহ বিশ্লেষণে বস্তনিষ্ঠভাবে তার হিসেব –নিকেশ মেলানোর পালা । রাজ্য সরকারের মূল্যায়নের এটাই তো উপযুক্ত সময় ! কেননা ,রাজ্যের প্রায় ২৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী যদি উন্নয়নের সব ধরনের মানদন্ডে পশ্চাদপদ থেকে যায় , তাহলে সামগ্রিকভাবে রাজ্যের অগ্রগতি কী করে সম্ভব হবে ? প্রশ্ন তুলেছেন আবদুস সাত্তার । একই সঙ্গে সাম্প্রতিককালে প্রতীচি ট্রাস্ট ও গাইডেন্স গিল্ডের যৌথ উদ্যোগে রাজ্যের মুসলিমদের বর্তমান অবস্থার যে শোচনীয় পরিসংখ্যান প্রকাশ পেয়েছে তার উল্লেখ্য করে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক ড. আবদুস সাত্তার । তিনি শুধুমাত্র মমতা সরকারের সমালোচনায় করেননি ।
একই সঙ্গে তিনি ওই প্রবন্ধে মমতা সরকার , কংগ্রেস ও পরবর্তীতে বাম সরকারের সংখ্যালঘুদের সার্বিক উন্নয়নের কাজকে তরান্বিত করতে আরও কি কি করতে পারতো তাও উল্লেখ করেছেন । তিনি ওই প্রবন্ধে একাধিক প্রস্তাবও দিয়েছেন যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু উন্নয়নের জন্য করতে পারতেন । তিনি তা করেননি । কেন করেননি ? বাধা কোথায় তাও জানতে চেয়েছেন আবদুস সাত্তার । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু উন্নয়নে নতুন আর কী কী করতে পারতেন