মোদী সরকারের উপর আস্থা হারাচ্ছে দেশের সাধারন মানুষ । না , কাশ্মীর ইস্যুতে নয় ,বরং আর্থিক পরিস্থিতি নয়ে গভীর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে সাধারন মানুষ । দেশের বেকারত্ব , জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে রীতিমত হতাশ এবং ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে তারা । এটা কোনো মনগড়া তথ্য নয় , খোদ সরকারের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দেশজুড়ে যে সমীক্ষা করেছে তাতে এই দৃশ্য উঠে এসেছে । সরকারি সমীক্ষায় যদি এই অবস্থা  হয় বাস্তবে সাধারন মানুষ মোদী সরকারের প্রতি যে আরও বিরক্ত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।
আসলে প্রথম মোদী সরকারের উপর সাধারন মানুষের আস্থা প্রবল ছিল এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই । আর সেই আস্থাকে সম্বল করেই দ্বিতীয় বার মোদী সরকারের ক্ষমতায় আসতে অসুবিধা হয়নি । কিন্ত দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার মোদী সরকার আর্থিক উন্নয়নের দিকে নজর না দিয়ে বিগত কয়েক মাসে এনআরসি , কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা রদ ,হিন্দু-মুসলমান বিভাজনেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে । আর এটাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে নিরবে আঘাত এসেছে অর্থনীতির উপর । বেকারত্ব রের্কড স্থাপন করেছে , একের পর শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । দেশের জিডিপি ৫ শতাংশে এসে ঠেকেছে । অথচ মোদী ৫ ট্রিলিয়ন অর্থনীতির স্বপ্ন দেখাচ্ছেন । দেশের সবক্ষেত্রে মন্দা অর্থনীতির প্রভাব পড়েছে ।
ভারতীয় রির্জাভ ব্যাঙ্কের মতে নাগরিকরাই দেশের বাজারে পণ্যের প্রধান ক্রেতা (কনজিউমার)। তাই তাঁদের আস্থার (কনফিডেন্স) পরিমাপ করে নিয়মিতই দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে আরবিআই। আর তা মাপা হয় ‘কারেন্ট সিচুয়েশন ইনডেক্স (সিসিআই)’ দিয়ে। দেশের প্রধান শহরগুলির নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতে।
সেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে আরবিআই দেখেছে, দ্বিতীয় ইউপিএ জমানায়, ২০১৩-র সেপ্টেম্বরে সেই ‘সিসিআই’ বা সূচক ছিল ৮৮।তার পর থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই সূচক চড়েছে। ১০০-র উপরেই থেকেছে। কিন্তু এই বছরের সেপ্টেম্বরে সেই সূচক নেমে পৌঁছেছে ৮৯.৪-এ।
কনজিউমার কনফিডেন্স ইনডেক্সের (সিসিআই) আরও একটি দিক রয়েছে। তার নাম- ‘ফিউচার এক্সপেকটেশন্স ইনডেক্স (এফইআই)’। দেখা যাচ্ছে, ভারতের অর্থনীতি আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াবে, সেই আশাও কমতে শুরু করেছে আমজনতার। ওই সূচক এ বছরের জুলাইয়ে ছিল ১২৪.৮। যা সেপ্টেম্বরে নেমে পৌঁছেছে ১১৮-এ।
বিশ্বের তাবড় তাবড় অর্থনীতিবিদরা বলছেন , ভারত সরকার এখুনি আর্থিক বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে আগামী দিনে দেশে আর্থিক বিপর্যয় ঘটতে পারে । তবে মোদী সরকার তা স্বীকার করতে রাজী নয় । সরকারের দাবি সব কিছু ঠিক আছে। কয়েক দিন আগে কর্পোরেট করে বিশাল ছাড়ের ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী । এই ঘোষনাকে অর্থনীতিবিদরা অন্যচোখে দেখলেও মোদীজি তাকে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলেছিলেন । কিন্ত দেখা গেল কর ছাড় দিয়েও মন্দা কমানো গেল না । তাই আবার আরবিআই থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা নিতে হচ্ছে মোদী সরকারকে । এটা দেশের অর্থনীতির পক্ষে সংকট বললে ভুল হবে না ।


Find out more: