মঙ্গলবার অর্থাৎ দশমীর দুপুরে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে খুন হন একই পরিবারের তিনজন। বাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হয় স্বামী, স্ত্রী ও ছয় বছরের শিশুসন্তানের ক্ষতবিক্ষত দেহ। খুনের পর দুদিন কেটে গেলেও কোনো খুনি ধরা পড়েনি । যে দুধ বিক্রেতা খুনিকে দেখেছিলেন বলে দাবি করেছেন তার বিবরণ মত খুনিকে খোঁজা হচ্ছে । তবে জেলা পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন , আশা করা হচ্ছে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে খুনিকে ধরা সম্ভব হবে ।
কে খুন করল তা তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে । জানা গেছে কোনো তৃতীয় ব্যক্তির অস্তিত্ব ।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস জানতে পেরেছে, এক ‘তৃতীয় ব্যক্তির’ উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। বেশ কয়েক বছর ধরেই চিড় ধরেছিল দাম্পত্যে। ওই ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তির আঁচও পাওয়া গিয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে মোবাইলের কললিস্ট ও মোবাইল থেকে পাওয়া কিছু ছবি। খুনের পিছনে ওই ব্যক্তির হাত থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিস। পুলিস সূত্রে খবর, সন্দেহভাজন সেই ব্যক্তির বাড়ি বীরভূমের রামপুরহাটের দিকে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পাশাপাশি আরও জানা গিয়েছে, পেশায় শিক্ষক প্রকাশ পাল সাগরদিঘিতে থাকার সময় স্থানীয় একজনের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা ধার করেছিলেন। সেই নিয়ে সমস্যা তৈরি হতেই বছর দেড়েক আগে তিনি সপরিবারে সাগরদিঘি থেকে জিয়াগঞ্জে চলে আসেন। খুনের ঘটনার সঙ্গে এঘটনার কোনও যোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিস। একইসঙ্গে পুলিস আরও মনে করছে, কোনও পরিচিত ব্যক্তিই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। খুনের আগে মাদক অথবা কোনও নেশার সামগ্রী খাওয়ানো হয়েছিল সবাইকে। অচৈতন্য অবস্থাতেই খুন করা হয় তিনজনকে।
ঘটনাস্থল থেকে হাতে লেখা একটি নোট উদ্ধার করেছে পুলিস। নোটটি নিহত বিউটি পালের লেখা বলেই প্রাথমিকভাবে অনুমান। এই নোট দেখেই স্বামী-স্ত্রীর বিবাদের বিষয়টি পুলিসের সামনে এসেছে। এছাড়া ঘর থেকে একটি ডায়েরিও উদ্ধার করেছে পুলিস। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেই ডায়েরিটিও। সবদিক খতিয়ে দেখেই তদন্তের জাল গুটাতে চাইছে পুলিস। জিয়াগঞ্জ থানার পুলিস আশাবাদী, আগামী ২৪ ঘণ্টাতেই খুনের কিনারা করে ফেলা সম্ভব হবে।


Find out more: