মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে হেরে গেল বিজেপি । কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল হিসাবে এই প্রথম কোনো আঞ্চলিক দলের নেত্রীর কাছে হার স্বীকার করতে হচ্ছে বিজেপিকে । হেরে গেল মানে ভোটে নয় , হেরে গেল কৌশলে । যে কৌশলে দিদির কাছের লোক বলে পরিচিত শোভনকে দলে নিয়েছিল বিজেপি সেই একই কৌশলে বিজেপির কাছ থেকে শোভন কেড়ে নিলেন মমতা । ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এলেন ।
গত বছর ভাঁইফোটার দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণ পাননি প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় । তা নিয়ে জোর জল্পনা দেখা দিয়েছিল বঙ্গ রাজনীতিতে । স্নেহের কানন প্রথমবার দিদি মমতার ভাঁইফোটা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন । তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল প্রবাহিত হয়েছে , ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে গেরুয়া শিবির ধাবা বসিয়েছে । ২ থেকে ১৮ আসন পেয়েছে । দিলীপ ঘোষদের হুঙ্কারে প্রশাসন নাজেহাল । এবছরের ১৪ আগষ্ট আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন দিদির আদরের কানন ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় । বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কয়েক দিন পর থেকেই ছন্দপতন । কোনো এক অজানা কারণে বিজেপি থেকে দূরত্ব রক্ষা করছিলেন শোভন । তারপর দিপাবলীর আগের দিন হঠাৎ শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে পৌছে যান বৈশাখী ।
আর মিডিয়া ধরে ফেলে এবার হয়তো ঘরের ছেলে ঘরে ফিরবে । তা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ-মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় । কিন্ত কেউ বলতে পারেনি যে আজ ভাঁইফোটার দিন দুপুরেই মমতার বাড়িতে ডাক পেয়েছেন স্বয়ং শোভন । দেখা গেল আজই দুপুরেই গোলপার্কের বাড়ি থেকে সরাসরি শোভন-বৈশাখী পৌছে যান মমতার বাড়িতে ফোঁটা নিতে । ফলে বঙ্গ রাজনীতিতে চলতে থাকা জল্পনার অবসান হয় । আজ ভাইফোঁটার দুপুরে মমতার বাড়ি পৌঁছে গেলেন শোভন-বৈশাখী। দীর্ঘক্ষণ নেত্রীর সঙ্গে আলাদা করে কথা হল কাননের। ফলে শোভনের আশু পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনা ফের তুঙ্গে পৌঁছে গেল।
এদিকে মমতার বাড়িতে ফোঁটা নিতে বিজেপির সদস্য শোভন –বৈশাখীর যাওয়াকে ভালভাবে মেনে নিতে পারেননি দিলীপ ঘোষ –মুকুল রায়রা । তাঁরা বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছেন বলে জানা গেছে । অস্বস্তিকে সামাল দিতে নানা অজুহাত সামনে আনা হচ্ছে । কেউ বলছেন ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে ভাঁইফোটা নিতে যেতেই পারেন । দিলীপ ঘোষ তো বলেই ফেললেন , মমতা ডাকলে তিনি ভাঁইফোটা নিতে যাবেন । মুকুল রায় বলেছেন , ব্যক্তিগতভাবে কেউ যেতেই পারেন । রাহুল সিনহা বলেছেন , প্রধানমন্ত্রী মনে করলে সোনিয়া গান্ধীর বাড়িতেও উৎসবের দিন যেতেই পারেন । আসলে বিজেপি দল মমতার কৌশলী চালের কাছে হেরে গেলেন তা স্পষ্ট হয়ে গেল।