ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে পাকিস্থানের বিরোধী দলগুলি এক হয়ে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে পাকিস্থান । শুক্রবার জুম্মার নামাযের পর ইসলামপন্থীদের আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে । বিরোধীরা জোটবদ্ধ হচ্ছেন ইমরানের বিরুদ্ধে । তবে ইমরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে , এখন আর ইসলামের নাম করে পাকিস্থানে ক্ষমতা দখল করা যাবে না । ইমরানের পাশে দাঁড়িয়েছে সেনাবাহিনী । তারা বলেছে , নির্বাচিত সরকারের পাশে আছে । উল্লেখ্য , ইমরানের সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে বলে ইসলামপন্থীরা দাবি করছে। অন্যদিকে জানা গেছে , ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছেন যা পাকিস্থানের অনেকের সহ্য হচ্ছে না । তারাই এখন ইমরানকে সরানোর লড়াই সামিল হয়েছে।
গত সপ্তাহে ইমরান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিরোধী নেতা ফজলুর রহমান সিন্ধু প্রদেশ থেকে ‘ আজাদি মার্চ‘ শুরু করেছিলেন । গত শুক্রবার এই মিছিল ইসলামাবাদে পৌছায় । সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফজলুর রহমান বলেন , ‘‘২০১৮ সালের ২৫ জুলাই পাকিস্তানে অবৈধ নির্বাচন হয়েছে। আমরা এই সরকারকে এক বছর সময় দিয়েছি। আর সময় দেওয়া সম্ভব নয়।’’ ইমরানকে ‘পাকিস্তানের গর্বাচেভ’ অ্যাখ্যা দিয়ে ফজলুর বলেন, ‘‘ওঁকে দু’দিনের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে।’’ সেইসঙ্গে হুমকির সুরে বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীরা এখনও শান্ত আছেন। কিন্তু পরে সমস্যা হতে পারে।’’
একই সঙ্গে ইসলামাবাদে ফজলুরের বাড়িতে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির বিলাবল ভুট্টো জারদারি, পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজের আহসান ইকবাল, খাজা আসিফ, পাখতুনখোয়া মিল্লি আওয়ামি পার্টির মেহমুদ খান আছাকজ়াইয়ের মতো বিরোধী নেতারা। সেই সঙ্গে দেশের ‘শক্তিশালী’ প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিরপেক্ষ থাকতে অনুরোধ করেন ফজলুর। ‘শক্তিশালী’ প্রতিষ্ঠান বলতে তিনি যে সেনাকে বুঝিয়েছেন, তা নিয়ে পাক রাজনীতিকদের সন্দেহ ছিল না। এদিকে , পাক সেনা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে , তারা নির্বাচিত সরকারের পাশেই আছে ।
রবিবার পাক সেনার মুখপাত্র আসিফ গফুর বলেন, ‘‘ফজলুর রহমান প্রবীণ রাজনীতিক। তিনি কোন প্রতিষ্ঠানের কথা বলতে চাইছেন, তা স্পষ্ট করা উচিত। সেনা নির্বাচিত সরকারের পাশেই আছে।’’ ২০১৮–র নির্বাচনের সময়ে সেনা মোতায়েন হওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, সেনা সংবিধান মেনেই দায়িত্ব পালন করছিল।
বিক্ষোভের মুখে এখনও অবিচলই রয়েছেন ইমরান। শুক্রবারই গিলগিট–বালটিস্তানে এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘ইসলামাবাদে জমায়েত হওয়া বিক্ষোভকারীদের খাবার ফুরিয়ে গেলে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু অন্য কোনও ধরনের সুবিধে পাওয়ার আশা তাঁরা ত্যাগ করতে পারেন। এখন আর ইসলামের কথা বলে পাকিস্তানে ক্ষমতা দখল করা যায় না।’’


Find out more: