শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের গোপন চালে শেষ পর্যন্ত হার স্বীকার করতে হল মোদী-শাহকে । একক বৃহত্তম দল হয়েও মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করতে পারল না বিজেপি । অন্যদিকে এনডিএ জোট বা সরকার ছেড়ে শিবসেনা বেরিয়ে এলে তাকে কংগ্রেস সমর্থণ দেবে একথা আগেই দলের পক্ষ বলা হয়েছিল । শিবসেনা সেই মত মোদী সরকার থেকে বেরিয়ে এল । এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে গেল শিবসেনা । প্রায় তিরিশ বছর ধরে এক সঙ্গে জোট করে রাজনীতি করলেও আজ সেই জোটের ভাঙন ধরল । কংগ্রেস সূত্রে খবর, মহারাষ্ট্রে শিবসেনা-এনসিপি জোট সরকার গঠন করবে, তাতে বাইরে থেকে সমর্থন করবে কংগ্রেস।
তার আগে এ দিন সমর্থন চেয়ে সোনিয়া গান্ধীকে ফোন করছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। অন্য দিকে বিকেলে দলের মহারাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। তাঁদের মতামত জানার পরেই এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারকে ফোন করে সিদ্ধান্তের কথা জানান কংগ্রেস কার্যকরী সভাপতি সোনিয়া।
অন্য দিকে কংগ্রেসের সবুজ সঙ্কেত পেয়েই রাজভবনে পৌঁছে গেলেন শিবসেনার প্রতিনিধিরা। সেনার পরিষদীয় দলনেতার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রাজ্য়পালের কাছে গিয়ে সরকার গঠনের দাবি করে আসে।
এই পরিস্থিতিতে পওয়ার-উদ্ধব বৈঠকে দু’দলের বৈঠকে সরকার গঠনে ঐকমত্য হয়। কিন্তু শরদ পওয়ার কংগ্রেসের কোর্টেই বল ঠেলে দেন। কংগ্রেস সকালের দিকে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক করে। তাতে সমর্থনের ইঙ্গিত মিললেও মহারাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে কথা না বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাননি সোনিয়া গান্ধী। এর পর বিকেলে বৈঠকে মহারাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পরেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। শরদ পওয়ারকে ফোন করে সমর্থনের কথা জানান সোনিয়া গান্ধী।
২৪ অক্টোবর ফল বেরনোর পর থেকেই ৫০:৫০ ফর্মুলা নিয়ে বিজেপি-শিবসেনা সঙ্ঘাত। ফল প্রকাশের দিনেই বাংলার জনরব প্রথম বলেছিল এবার মহারাষ্ট্রে সরকার গড়বে শিবসেনা । কারণ শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের স্বপ্ন ছিল মারাঠা ভূমে তারা একদিন শাসন করবে । সেই স্বপ্ন যখন বাস্তবের কাছাকাছি এসে পৌছায় তখন আর ভুল যে করবেন না এটা বাংলার জনরব আগেই বুঝতে পেরেছিল । অন্যদিকে শরদ পাওয়ারের মত একজন রাজনীতিবিদকে যেভাবে হেয় করার চেষ্টা করেছেন মোদী-অমিত শাহরা তার বদলা যে পাওয়ার নেবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । তিনি সেই বদলা নিলেন শিবসেনার পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে সরকার থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে । অন্যদিকে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেভাবে কংগ্রেসের ১৬ জন বিধায়ককে বিজেপি নিয়ে ছিল তাও ভুলতে পারেননি সোনিয়া গান্ধী । তাই সুযোগ পেয়েই ছোবল মারল বিজেপিকে । এবার বিজেপি যদি সাবধান না হয় তাহলে আগামী দিনে আরও সংকটে পড়বে । কারণ মনে রাখতে হবে ক্ষমতার শীর্ষে পৌছে যাওয়ার পর একটু ভুল করলেই পতন অনিবার্য ।