মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ছকের কাছে অনেকটাই বেকায়দায় পড়েছে বিজেপি । মাত্র কয়েক মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে যেখানে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল। কিন্ত মাত্র ৬ মাসের মধ্যে বিজেপির হাওয়া বাংলা থেকে উধাও কেন হল ? সেই প্রশ্ন আজ আমাদের সামনে এসেছে । উত্তর খুঁজতে জানা গেল মমতার নয়া রাজনৈতিক দিশা । সেই রাজনৈতিক কূট-কৌশলের কাছে শুধু দিলীপ ঘোষ নয় , স্বয়ং অমিত শাহও অসহায় হয়ে পড়েছে ।
২৫ নভেম্বর এই রাজ্যে তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন । এই তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখানের দায়িত্বে আছেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি যে খড়্গপুর আসনটি তৃণমূলের জয়কে সুনিশ্চিত করবেন তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই । এই আসন থেকে কংগ্রেসের বিধায়ক জ্ঞান সিংহ সোহন পালকে হারিয়ে দিলীপবাবু জয়ী হয়ে বিজেপির যাত্রার সূচনা করেছিলেন । এরপর নদিয়ার করিমপুর তৃণমূলের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র । উত্তর দিনাজপুরে কালিয়গঞ্জে গত লোকসভা নির্বাচনে ভাল ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বিজেপি । এবার এই আসনটি ছিনিয়ে নিতে পারে তৃণমূল । কারণ কংগ্রেস -সিপিএম জোট হওয়ার কারণে বিজেপি আগের ভোট আর ধরে রাখতে পারবে না ।
তাই তৃণমূল কংগ্রেস তার কৌশলের পরিবর্তন করেছে । তৃণমূলের লক্ষ্য দুটি হারা আসনে জেতা । জেতা আসন করিমপুরের জন্য কোনও ইস্তাহার প্রকাশ করা হবে কি না, এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি রাজ্যের শাসক দল। কিন্তু আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হল খড়্গপুর সদরের নির্বাচনী ইস্তাহার। তৃণমূল সূত্রের খবর, কালিয়াগঞ্জের ইস্তাহারও তৈরি, দু-এক দিনেই সেটাও আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গে শুধু নয়, ভারতের কোনও প্রান্তেই কোনও রাজনৈতিক দলকে উপনির্বাচনের জন্য আলাদা নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করার নজীর নেই। বিজেপি বা বাম-কংগ্রেস এই উপনির্বাচনের জন্য আলাদা ইস্তাহার প্রকাশের কথা ভাবেইনি। কিন্তু তৃণমূল শুধু ভাবল না, খড়্গপুরের জন্য ইস্তাহার প্রকাশও করে ফেলল। খড়্গপুর সদরে যদি জেতেন তৃণমূলের প্রদীপ সরকার, তা হলে তিনি কোন কাজে অগ্রাধিকার দেবেন, এলাকার কোন কোন সমস্যার সমাধান করবেন— উপনির্বাচনের ইস্তাহারে মূলত সে কথাই লেখা হয়েছে। কালিয়াগঞ্জের ক্ষেত্রেও স্থানীয় বিষয়গুলি নিয়েই ইস্তাহার প্রকাশ করা হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা ভোটের পর থেকে নানা রকম স্ট্যাটেজি নিয়ে চলেছে । নতুন নতুন পরীক্ষা -নিরীক্ষা চলছে । দিদিকে বলো প্রকল্পের পর এবার আমাদের গর্ব মমতা নামে প্রকল্পটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে । দিদিকে বলো এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে এর ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রহণযোগ্যতা অনেকটাই বেড়ে গেছে ।