বিজেপি শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করেও পদত্যাগ করতে বাধ্য হল । ২০১৪ সালের পর মোদী-অমিত শাহদের এ রকম লজ্জাকর হার দেখা যায়নি । অথচ একটু নমনীয় হলেই মহারাষ্ট্রে শিবসেনাকে নিয়ে সরকার গঠন করতে পারত বিজেপি । তা হয়নি । বরং ঘুরপথে চেষ্টা হয়েছে ক্ষমতা দখলের । কিন্ত শরদ পাওয়ারের সত্যিকার পাওয়ার প্রমাণ করেছে বিজেপি এখনও শিশু । তাই শেষ পর্যন্ত চেষ্টা ব্যর্থ হল ।
দেবেন্দ্র ফরেণবীশ পদত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের ট্রাইডেন্ট হোটেলে যৌথ বৈঠকে বসেন শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের নেতারা। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে ‘মহা বিকাশ আঘাডি’ জোটের নেতা এবং আগামী পাঁচ বছরের জন্য মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে উদ্ধব ঠাকরের নাম পাশ হয়। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১ ডিসেম্বর উদ্ধব শপথ নেবেন বলে জানিয়েছেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার। বৈঠক শেষে এ দিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শরদ পওয়ার বলেন, ‘‘মহা বিকাশ আঘাডির তিন প্রতিনিধি আজ রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন। আগামী ১ ডিসেম্বর মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে।’’ এর কিছু পরেই রাজভবনে পৌঁছে যান কংগ্রেস, এনসিপি এবং শিবসেনার সম্মিলিত শক্তি ‘মহা বিকাশ আঘাডি’ জোটের নেতারা।

এই ঘোষনার সঙ্গে সঙ্গে শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের স্বপ্ন সফল হল । তিনি বলেছিলেন , মারাঠা ভূমে একদিন শিব সৈনিক মুখ্যমন্ত্রী হবেন । তাঁর সন্তান উদ্ধব ঠাকরে আগামী রবিবার শপথ নিতে চলেছেন । সেদিক থেকে বাল ঠাকরের স্বপ্ন সফল হল ।
কংগ্রেস এবং এনসিপি-র সঙ্গে যৌথ বৈঠকে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব পাশ হলে উদ্ধব বলেন, ‘‘রাজ্যের নেতৃত্বে বসতে পারব বলে কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি।  সোনিয়া গাঁধী-সহ বাকিদের ধন্যবাদ জানাই। একে অপরের উপর ভরসা রেখে গোটা দেশকে নতুন দিশা দেখাতে পেরেছি আমরা। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ যে মহারাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা-ই গড়ে তুলব আমরা।’’
মহারাষ্ট্রে শেষমেশ গণতন্ত্রের জয় হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন উদ্ধব। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা যে দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন, তা গ্রহণ করলাম আমি। কিন্তু আমি একা নই, আমার সঙ্গে আপনারা সকলেই মুখ্যমন্ত্রী। আজ যা ঘটল, এটাই আসল গণতন্ত্র। একজোট হয়ে রাজ্যের কৃষকদের চোখের জল মোছার চেষ্টা করব আমরা।’’
তবে মুখ্যমন্ত্রী পদে উদ্ধবের নাম ঠিক হয়ে গেলেও, তাঁর ডেপুটি কে বা কারা হবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি এখনও পর্যন্ত। তবে এনসিপি এবং কংগ্রেস থেকে মোট দু’জনকে উপ মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে বলে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।

Find out more: