রাজ্যের তিনটি বিধানসভা নির্বাচনেই তৃণমূল কংগ্রেস যে জিততে চলেছে তার আগাম পূর্বাভাষে বাংলার জনরব নিউজ পোর্টাল আগেই বলেছিল । খড়্গপুর যে জিততে চলেছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল । বাংলার জনরব আগেই বলেছিল মমতা কৌশলী রাজনীতিতে উপনির্বাচনে কুপোকাৎ হবে বিজেপি । আমাদের আগাম সমীক্ষাকে সত্য করে মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে রায় দিল ।
তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিপুল জয়ের পর আত্মবিশ্বাসী মমতা বলেই ফেললেন , তিনে তিনে, বিজেপিকে বিদায় দিন । এই জয়ের পর বৃহস্পতিবার তিনি ফের সরব হন জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এনআরসি)-র বিরুদ্ধেও।
মাত্র ছয় মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর-কালিয়াগঞ্জে পিছিয়ে থেকেও দুই কেন্দ্রে উপনির্বাচনে বিপুল ভোটের এই জয়কে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি এই জয়কে রাজ্যের মানুষকে উৎসর্গ করেছেন। পাশাপাশি তাঁর নতুন স্লোগান, ‘‘তিনে-তিন, বিজেপিকে বিদায় দিন।’’
তিন কেন্দ্রেই এনআরসি যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে, সে কথা বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। ভোটের ফল মোটামুটি স্পষ্ট হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওদের ঔদ্ধত্য, অহংকারকে মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি। যখন তখন যে কোনও রাজ্যে যা খুশি করছে। বিজেপি কখনও এনআরসি, কখনও অন্য কিছু নিয়ে যা খুশি প্রচার করছে। এই মানুষরাই দীর্ঘ দিন ধরে ভোট দিয়েছেন, এমপি-এমএলএ বানিয়েছেন, সমস্ত কাজ করেছেন। আর এখন ওরা (বিজেপি) বলছে, নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে।’’ এর সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অর্থনীতির খারাপ হাল। মানুষ কাজ পাচ্ছেন না, উল্টে কাজ হারাচ্ছেন। যুব সমাজের কাছে কোনও দিশা নেই।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন আরও বলেন, ‘‘৯৮ সালে দল তৈরি হওয়ার পর থেকে গত ২১ বছর ধরে আমরা কোনও দিন কালিয়াগঞ্জ এবং খড়্গপুর আসন জিততে পারিনি। এ বার মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করেছেন। এটা মানুষের জয়। তাই মানুষকেই এই জয় উৎসর্গ করছি আমরা। মানুষের রায়ই বড় রায়, তার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না।’’ মমতার কথায়, ‘‘দলের কর্মীরা সবাই মন-প্রাণ দিয়ে কাজ করেছেন। সবাই কাজ করেছেন। তাঁদের এই পরিশ্রমেই জয় এসেছে।’’
মাত্র ৫ মাস আগে লোকসভা ভোটের নিরীখে খড়্গপুর এবং কালিয়াগঞ্জ— দুই কেন্দ্রেই বিরাট ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বিজেপি। খড়্গপুরে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ এগিয়ে ছিলেন ৪৫ হাজার ১৩২ ভোটে। অন্য দিকে রায়গঞ্জ লোকসভার অন্তর্গত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী এগিয়ে ছিলেন ৫৬ হাজার ৭৬২ ভোটে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘এত বিপুল ব্যবধান অতিক্রম করে জেতাটা বিরাট ব্যাপার। এটা দলের কর্মীদের একাগ্রতা এবং মানুষের প্রতি বিশ্বাস রাখার ফসল।’’