রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত এবার বিধানসভা ছাড়িয়ে দিল্লির রাজ্যসভা পর্যন্ত পৌছে গেল । নজীরবিহীনভাবে রাজ্যপাল বিল আটকে রাখায় বন্ধ হয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার কাজ— এই ইস্যুতে রাজ্যসভায় মঙ্গলবার তুমুল হই-হট্টগোল করলেন তৃণমূল সাংসদরা। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের অপসারনের দাবি তুলে কক্ষ ছেড়ে বেরিয়েও গেলেন। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতেও এ দিন বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল বিধায়করা। গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে স্লোগান তুললেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। আর রাজভবনের তরফে ফের জানানো হল, রাজ্য সরকারের অসহযোগিতাতেই আটকে রয়েছে বিল। যে সব বিলের সঙ্গে আর্থিক বিষয় জড়িত, সেই বিল বিধানসভায় পেশ করার আগে রাজ্যপালের অনুমোদন নিতে হয়। এমন বেশ কয়েকটি বিল রাজ্যপাল আটকে রেখেছেন বলে জানিয়ে বিধানসভার অধিবেশন দু’দিনের জন্য স্থগিত করে দিয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে সরকার পক্ষের তুমুল চাপানউতোর চলে।
মঙ্গলবার জিরো আওয়ার শুরু হওয়ার ঠিক আগে রাজ্যসভায় বিষয়টি তোলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তবে রাজভবনে আটকে থাকা একাধিক বিলের কথা নয়, মূলত তফসিলি জাতি-জনজাতি কমিশন বিলের কথাই তুলে ধরেন তিনি। এই বিল রাজভবনে আটকে রয়েছে বলে যে স্পিকার দু’দিনের জন্য বিধানসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দিয়েছিলেন, তা-ও রাজ্যসভায় উল্লেখ করেন শান্তনু। তার পরেই তৃণমূলের সাংসদরা সবাই মিলে হই-হট্টগোল শুরু করেন এবং কিছুক্ষণ পরে সভা থেকে ওয়াকআউট করেন।
বাইরে বেরিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘তফসিলি জাতি-জনজাতি কমিশন বিলটাকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল আটকে রেখেছেন। এটা তফসিলি জাতি-জনজাতির অপমান, এটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের অপমান, এটা সংবিধানের অপমান।’’ অবিলম্বে জগদীপ ধনখড়কে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফিরিয়ে নিতে হবে, এই দাবিও তোলেন ডেরেক। এর পরে সংসদ চত্বরে মিছিল করেন তৃণমূল সাংসদরা। ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, শান্তনু সেন, দোলা সেন, শান্তা ছেত্রী, নাদিমুল হক, মানস ভুঁইয়া, মণীশ গুপ্তরা ছিলেন সে মিছিলে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতেই স্লোগান তোলা হয় সে মিছিলে।