নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় সোমবার, আগামিকাল, মঙ্গলবার এবং পরশু, বুধবার শহরে মিছিল করবেন তিনি। তার ফলে সপ্তাহের প্রথম তিনটি কাজের দিনেই যানজটের আশঙ্কা থাকছে। সেই যানজটে শহরের নাগরিকদের ভুগতে হতে পারে।
লালবাজারের খবর, আজ, সোমবার বেলা ১টায় রেড রোডে অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশ থেকে মিছিল শুরু করবেন মুখ্যমন্ত্রী। রেড রোড, মেয়ো রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, ধর্মতলা হয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ দিয়ে তিনি জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত যাবেন। তার ফলে মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় যানজটের আশঙ্কা থাকছে। যার প্রভাব পড়তে পারে শহরের বাকি এলাকাতেও।
পুলিশ সূত্রের খবর, কাল, মঙ্গলবার বেলা ১টায় যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল শুরু করে ঢাকুরিয়া, গড়িয়াহাট, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ হয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ও আশুতোষ মুখার্জি রোড হয়ে যদুবাবুর বাজারে মিছিল শেষ করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তার ফলে দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় যানজট তো হবেই, চৌরঙ্গি-সহ মধ্য কলকাতার একাংশেও এর প্রভাব পড়বে। পরশু, বুধবার ওই একই সময় অর্থাৎ বেলা ১টায় হাওড়া ময়দান থেকে মিছিল শুরু করে হাওড়া ব্রিজ, ব্রেবোর্ন রোড, রবীন্দ্র সরণি, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট হয়ে এসপ্লানেড পর্যন্ত মিছিল করবেন মুখ্যমন্ত্রী। লালবাজারের কর্তারা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী মিছিলে হাঁটলে প্রবল জনসমাগম হবে। তার ফলে মুখ্যমন্ত্রী মিছিলের গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার পরেও দীর্ঘ ক্ষণ রাস্তা আটকে থাকতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ, মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা যানজটের কবলে পড়তে পারে, এই আঁচ করে গাড়ি ঘুর পথে চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ভাবেই যথাসম্ভব যানজটের যন্ত্রণা কমানোর চেষ্টা করবে ট্র্যাফিক। মিছিলের শুরুতে ফোর্ট উইলিয়ামের পূর্ব দিকের গেটের মুখ থেকে গাড়ি খিদিরপুর রোড, স্ট্র্যান্ড রোড দিয়ে ঘুর পথে চালানো হবে। মিছিল মেয়ো রোডে এলে ওই রাস্তার গাড়ি কুইনস ওয়ে দিয়ে ঘোরানো হবে। তবে মিছিল জওহরলাল নেহরু ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে এলে যানজট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুলিশের দাবি, সাধারণত রাস্তার একপাশ বন্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে ভিড় অত্যধিক হলে রাস্তার দু’দিকও বন্ধ করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মিছিল কোনও মোড় পেরিয়ে গেলেই দ্রুত গাড়ি চলাচল শুরু করা হবে।
কাল, মঙ্গলবার যাদবপুর থেকে মিছিল রওনা হওয়ার পরে এস সি মল্লিক রোডে তার প্রভাব পড়বে। তখন আশপাশের রাস্তা দিয়ে ছোট গাড়িগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। মিছিলের কারণে গড়িয়াহাট মোড় এবং রাসবিহারী অ্যাভিনিউ অবরুদ্ধ হলে কর্নফিল্ড রোড ও সাদার্ন অ্যাভিনিউকে বিকল্প রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ও আশুতোষ মুখার্জি রোডে মিছিল পৌঁছলে যানজট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ল্যান্সডাউন দিয়ে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করা হবে।
পরশু, বুধবার হাওড়া থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত মিছিলের জেরে বড়বাজার এলাকার যান চলাচলে প্রভাব পড়তে পারে। ভরদুপুরে ডালহৌসি এলাকার অফিস পাড়াতেও মিছিলের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মিছিল এসপ্লানেডে শেষ হওয়ার ফলে ফের মধ্য কলকাতা এক বার অবরুদ্ধ হতে পারে।
পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, ধর্মতলা চত্বর কলকাতার প্রাণকেন্দ্র। ফলে যে কোনও মিছিল এখান দিয়ে গেলে তা সামগ্রিক যান চলাচলে প্রভাব ফেলবেই। তাঁর মতে, ‘‘তবে মিছিলের জেরে মানুষের দুর্ভোগ যাতে কম হয় আমরা আপ্রাণ সেই চেষ্টা করব।’’