
দেশ বিরোধী মনোভাবকে উস্কানী দেয় এমন কোন খবর পরিবেশন করা যাবে না বলে কেন্দ্র সরকার এক নির্দেশিকা জারি করেছে । কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক থেকে জারি করা এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে ,“এটি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে যে ওই ধরণের দেশ বিরোধী প্রচার না দেখানোর পরামর্শ দেওয়া সত্ত্বেও কিছু টিভি চ্যানেল এমন বিষয়বস্তু প্রচার করছে যা এতে অনুষ্ঠান সম্প্রচার সংক্রান্ত বিধিনিষেধকে লঙ্ঘন করছে“। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক বলেছে, “সমস্ত টিভি চ্যানেলগুলিকে এমন কোনও বিষয়বস্তু প্রদর্শন করা থেকে বিরত থাকতে হবে যা মানুষকে সহিংসতায় প্ররোচিত করতে পারে বা আইন শৃঙ্খলা রক্ষণাবেক্ষণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে উস্কানি দিতে পারে বা জাতীয়তা বিরোধী মনোভাবকে উৎসাহিত করতে পারে“।
ওই নির্দেশিকায় একথাও বলা হয়েছে যে, নিউজ চ্যানেলগুলিকে “জাতির অখণ্ডতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন কোনও বিষয়বস্তু না দেখানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি এমন কিছুও প্রচার করা যাবে না যা ব্যক্তি বা কোনও নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে আঘাত করে এবং দেশের সামাজিক এবং নৈতিক জীবনে কুপ্রভাব ফেলতে পারে“। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক সমস্ত সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে “কঠোর সম্মতি” দাবি করেছে।
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক গত ১১ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পরেই এমন একটি নির্দেশিকা জারি করে। ডিরেক্টর অমিত কাটোচের সই করা ওই চিঠিটি পাঠানো হয় সমস্ত ডিটিএইচ ও কেব্ল অপারেটর, নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রজত শর্মা এবং ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট এন পি সিংকে। বেসরকারি চ্যানেলগুলিকে ১৯৯৫ সালের কেব্ল টিভি আইন মেনে চলার কথা মনে করিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ‘‘সম্প্রচারের সময়ে এমন সব বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যেগুলি হিংসায় ইন্ধন দেয়, আইন–শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় বা দেশ–বিরোধী ভাবনাকে প্রশ্রয় দেয়।” তবে বাস্তবক্ষেত্রে দেখা যায়, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাসের পরেই দেশ জুড়ে লাগাতার বিক্ষোভের ঝড় চলছে।
পাশাপাশি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অনুযোগ যে, ১১ ডিসেম্বর ওই নির্দেশিকা জারি করা হলেও বেশ কিছু বেসরকারি টিভি চ্যানেল সেগুলি মেনে চলছে না। তাই ফের এই নির্দেশিকা জারি করে সমস্ত টিভি চ্যানেলকে সতর্ক করে দেওয়া হল। পাশাপাশি এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে ডিটিএইচ অপারেটর, কেবল অপারেটরদেরও। প্রশ্ন উঠেছে এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করেও কী বিক্ষোভ-আন্দোলেনকে থামানো যাবে । সংবাদ মাধ্যমের দায়িত্ব হল সঠিক খবর সাধারন মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া । তা সঠিক করছে কিনা সেটাই দেখা সরকারের কাজ বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে ।