বিজেপির সাংসদ অর্জুন সিংহের ঘরে ঢুকে দখল করে ফেলে পুরসভা তৃণমূল । তা দেখে খানিকটা হতভম্ব হয়ে পড়ে বিজেপি । ছুটে যায় হাইকোর্টে । দুপুর বেলা হঠাৎ সমস্ত সংবাদ মাধ্যমে খবর বের হয় ভাটপাড়া পুরসভার দখল নিয়েছে তৃণমূল । কিন্ত সন্ধ্যায় কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় তৃণমূল আনা অনাস্থা প্রস্তাব বৈধ নয় , সুতরাং এই ভোটাভুটিও বৈধ নয় । ফলে ভাটপাড়া যেমন বিজেপির দখলে ছিল ৈ, তেমনই থাকবে বলে কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেয় । সুতরাং অর্জুন সিংহের গড়ে আপাতত স্বস্তি ফিরল গেরুয়া শিবিরে।
গত ৩০ ডিসেম্বর ভাটপাড়ার ৩ তৃণমূল কাউন্সিলর অনাস্থার নোটিস দেন। তার ভিত্তিতেই এ দিন ভোটাভুটি হয়। বিজেপি যে হেতু এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল, তাই বিজেপির দিকে থাকা কাউন্সিলরদের কেউই এ দিন যাননি পুরসভায়। কিন্তু তৃণমূলও ২২ জন কাউন্সিলরকে নিজেদের পক্ষে দেখাতে পারেনি। ১৯ জনকে তারা হাজির করতে পেরেছিল ভোটাভুটিতে। বিজেপি অনুপস্থিত থাকায় ১৯-০ ভোটে তৃণমূলকেই জয়ী ঘোষণা করা হয়।
লোকসভা নির্বাচনের আগে ও পরে এ রাজ্যের যতগুলি পুরবোর্ড রং বদল করে বিজেপিতে শামিল হয়েছিল, তার মধ্যে ভাটপাড়া ছিল অন্যতম। লোকসভায় বিজেপি এ রাজ্যে চমকে দেওয়া ফলাফল করেছিল ঠিকই, কিন্তু তার কয়েক মাস পর থেকেই ফের ঘর গুছিয়ে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। তার অঙ্গ হিসেবেই বিজেপির দিকে চলে যাওয়া পুরবোর্ডগুলি তৃণমূল পুনর্দখল করেছে একে একে। বাদ রয়েছে শুধু ভাটপাড়া। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের খাসতালুক ভাটপাড়া পুনর্দখল করতেই সবচেয়ে বেগ পেতে হচ্ছিল তৃণমূলকে। বৃহস্পতিবার সে চেষ্টা প্রায় সফল হয়ে গিয়েও হল না।
ভাটপাড়া পুরসভায় বিজেপি গরিষ্ঠতা হারিয়েছে। অনাস্থা বৈঠক ডাকার জন্য চেয়ারম্যানের উপরে চাপ তৈরি করা হচ্ছিল। চেয়ারম্যান ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় চান। কিন্তু তৃণমূল সময় দিতে রাজি ছিল না। ৩৫ আসনের পুরসভায় ২২ জনই এখন তৃণমূলের দিকে রয়েছেন বলে তৃণমূল দাবি করছিল।
কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, ৩ কাউন্সিলের দেওয়া নোটিস বা এ দিনের ভোটাভুটি সবই বাতিল।হাইকোর্টের এই নির্দেশের ফলে বিজেপির হাতেই রয়ে গেল পুরবোর্ড। অনাস্থা আনা বা তার উপরে ভোটাভুটি— সবই পুর আইন মেনেই হবে বলে হাইকোর্ট জানিয়েছে। ফলে শক্তি পরীক্ষায় বিজেপি-কে যেতেই হবে। কিন্তু যতটা তড়িঘড়ি তার আয়োজন তৃণমূল করতে চেয়েছিল, তা হাইকোর্ট হতে দিল না।
তবে উত্তর ২৪ পরগণার তৃণমূল জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন , তারা খুব শীঘ্রই কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যাবেন ।

Find out more: