সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরুদ্ধে সমগ্র ভারত জুড়ে আন্দোলন চলছে । সাধারন মানুষ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে । একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীও সিএএ –র বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন । এই পরিস্থিতিতে নিজেদরে অনুকূলে জনমত তৈরি লক্ষ্যে সিএএ-র প্রাসঙ্গিতাকে তুলে ধরার জন্য এবার আম জনতার কাছে যাচ্ছেন বিজেপি-র নেতারা । এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের মত হেভিওয়েটরা ।
আজ শুক্রবার এমনই এক সভায় রাজস্থানের যোধপুর থেকে সিএএ-র বিরোধিতা করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র ভাষঅয় আক্রমণ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ।অত্যাচারে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া মানুষদের ভারত নাগরিকত্ব দিলে আপনার এত সমস্যা হচ্ছে কেন? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। মমতাকে ভয় পাবেন না, সসম্মানে নাগরিকত্ব নিয়েই বাঁচবেন— রাজস্থান থেকে হুঙ্কার বিজেপি সভাপতির।
সিএএ কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আইন নয়, বরং শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন— এ কথাই বার বার বোঝানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। যোধপুরের ভাষণেও অমিত শাহ এ দিন প্রথমে সে কথাই বলেন। তার পরেই প্রশ্ন ছুড়ে দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে। শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তে তাঁর সমস্যা হচ্ছে কেন? প্রশ্ন তোলেন শাহ।
বাংলাদেশে থেকে যাঁরা শরণার্থী হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছেন, এ দিন রাজস্থানের জনসভা থেকে তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি। আপনারা অত্যাচারিত হয়ে এসেছেন। এখানে কোনও অত্যাচার সহ্য করতে হবে না। সম্মানের সঙ্গে নাগরিকত্ব নিয়ে এখানে থাকবেন। মমতাদিদিকে ভয় পাবেন না।’’
অমিত শাহ এ দিন বলেন, ‘‘গণতন্ত্রে জনতাকে বিভ্রান্ত করা এত সহজ নয়। কাল থেকেই ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার শুরু হবে। আপনাদের ছড়ানো বিভ্রান্তি আমরা দূর করব।’’ তার পাশাপাশি মিসড্ কলের মাধ্যমে সিএএ-কে সমর্থন জানানোর নতুন কর্মসূচির সূচনাও এ দিন করেছেন তিনি। যোধপুরের জনসভা থেকেই একটি ফোন নম্বর ঘোষণা করেছেন অমিত শাহ। যাঁরা সিএএ-কে সমর্থন করেন, তাঁদের ওই নম্বরে মিসড্ কল দিতে বলেছেন শাহ। ওই নম্বরে মিসড্ কল দিয়ে ‘রাহুলবাবা, মমতা আর কেজরীবালকে জবাব দিন’— আহ্বান বিজেপি সভাপতির। তবে সব কিছুর মধ্যে সবচেয়ে চোখে পড়েছে মমতার বিরুদ্ধে বিজেপির তীব্র আক্রমণ।
আসলে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব মমতা । এমনকি মমতার দেখানোর পথে অনেক রাজ্য সরকারও হাঁটতে শুরু করেছে । বিশেষ করে এনপিআর ইস্যুতে মমতায় প্রথম সিদ্ধান্ত নেন বাংলায় এখনই এনপিআর হবে না , তারপরেই কেরল সরকারও একই সিদ্ধান্ত নেয় । এদিকে সিএএ আইনটি তৈরি করা হয়েছে মূলত পশ্চিমবাংলার দিকে লক্ষ্য রেখে । ২০২১-র বিধানসভায় এই রাজ্যের হিন্দু ভোটের মেরুকরণের লক্ষ্যে বিজেপি সরকার এই আইন চালু করেছে । তাই অমিত শাহ সুদূর পশ্চিমভারতে গিয়েও মমতাকে আক্রমণ করছেন ।