দীর্ঘ ৭ বছর পর নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীদের শাস্তি ঘোষণা হল। দোষীদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করল দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। আগামী ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় চার দোষী, পবন গুপ্ত, মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা এবং অক্ষয় ঠাকুর সিংহকে ফাঁসিতে ঝোলানোর নির্দেশ দিল আদালত।
এ দিন তিহাড় জেল থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকের সঙ্গে কথা বলে ওই চার দোষী। তাদের বক্তব্য শোনার পর বিকাল ৫টা নাগাদ রায় দেন বিচারক। তবে দোষীরা চাইলে রায় সংশোধনের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাতে পারে। ক্ষমাভিক্ষাও করতে পারে।
দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করার নির্দেশ এগিয়ে আনতে পাতিয়ালা হাউস কোর্টে আর্জি জানিয়েছিলে নির্ভয়ার পরিবার। তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারির আর্জি জানিয়েছিলেন নির্ভয়ার মা নির্ভয়া দেবী এবং বাবা বদ্রীনাথ সিংহ।
গত ১৮ ডিসেম্বর সেই আবেদনের শুনানি চলাকালীন, ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত রায় স্থগিত রাখেন অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সতীশ অরোরা। সেইসময় আদালতের মধ্যেই ভেঙে পড়েছিলেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। এ দিনও আদালতের রায়ের পর কান্না চেপে রাখতে পারেননি আশাদেবী। তবে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের শেষে সাফল্যের তৃপ্তিও ছিল তাতে।
আদালত থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন আশাদেবী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘এই রায়ে আইন ব্যস্থার উপর মানুষের আস্থা ফিরবে। আমার মেয়ে সুবিচার পাবে। সুবিচার পাবে দেশের সমস্ত মেয়ে।’’
নির্ভয়ার বাবা বদ্রীনাথ বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে খুশি আমি। ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় দোষীদের ফাঁসি হবে। এই ধরনের অপরাধ যারা ঘটায়, এই রায় তাদের মনে ভয় ধরাবে।’’
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছরের তরুণী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করে ৬ দুষ্কৃতী। নির্ভয়া এবং তাঁর বন্ধু অবীন্দ্র প্রতাপের উপর নৃশংস অত্যাচার চালায় তারা। সেই মামলায় আগেই ওই চার জনকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৭ সালে সেই রায় পুনর্বিবেচনা করে দেখতে আদালতে আর্জি জানিয়েছিল অক্ষয়। গত মাসেই তার সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে।